কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় ফুসকা ও জিলেট ব্লেডসহ চারজন চোরাচালানকারীকে আটক করেছে নৌ পুলিশ। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে আশুগঞ্জ থানাধীন মা মনি ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে একটি বাল্কহেড আটক করে তল্লাশি চালিয়ে ৬০ বস্তা ভারতীয় ফুসকা ও প্রায় ৬ হাজার ৪০০ পিস (৩২০ পাতা) জিলেট ব্লেড উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত পণ্যের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা এবং জব্দকৃত বাল্কহেডটির মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে উদ্ধারকৃত মালামালের মোট মূল্য দাঁড়ায় ১৮ লাখ টাকারও বেশি।
আটক চারজন হলেন—ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের মৃত রমজান মিয়ার ছেলে ইসমাইল মুন্সি (৩৭), মৃত দানিছ মিয়ার ছেলে রাকিব মিয়া (৩৫), মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে নিজাম (৫৫) এবং আব্দুল হামিদের ছেলে রানা (৩২)।
নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই চারজনই একটি সক্রিয় চোরাচালান চক্রের সদস্য, যারা দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় পণ্য এনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছিল।
ভৈরব নৌ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান চালানো হয়।
তিনি বলেন, “মেঘনা নদীর মা মনি ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় সন্দেহজনক একটি বাল্কহেড থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় বিপুল পরিমাণ ভারতীয় ফুসকা ও শতশত প্যাকেট জিলেট ব্লেড উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকেই চারজনকে আটক করা হয়েছে।”
অন্যদিকে নৌ থানার আরেক কর্মকর্তা এসআই মো. জোবায়ের হোসেন বলেন, এটি সক্রিয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় ফুসকা ও জিলেট ব্লেড এনে ভৈরব, আশুগঞ্জ ও আশপাশের বাজারে সরবরাহ করতো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা স্বীকার করেছেন যে তারা প্রায় এক বছর ধরে ভারতীয় পণ্য পাচারের সঙ্গে যুক্ত। তারা সীমান্তবর্তী অঞ্চলের স্থানীয় এক প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় এই কাজ পরিচালনা করতো।
ভৈরব নৌ থানার পুলিশ বাদী হয়ে আশুগঞ্জ থানায় চোরাচালান দমন আইনে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেছে। আটক চারজনকে উদ্ধারকৃত পণ্য ও বাল্কহেডসহ আশুগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই চক্রটির সঙ্গে সীমান্ত অঞ্চলের আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে। তাদের শনাক্তে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভৈরব ও আশুগঞ্জ অঞ্চলে নৌ পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে বেশ কয়েকটি বড় চোরাচালান চক্র ধরা পড়েছে। বিশেষ করে সীমান্ত ঘেঁষা নদীপথে ভারতীয় পণ্য—যেমন ফুসকা, ব্লেড, সিগারেট ও প্রসাধনী—চোরাচালান বৃদ্ধি পেয়েছিল।
Leave a comment