ভারতের গুজরাটে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত দুই ব্রিটিশ নাগরিকের পরিবার বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে—কারণ তাদের হাতে যে মরদেহ পাঠানো হয়েছে, ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গেছে সেগুলো তাদের স্বজনদের নয়। গত ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট AI171 কিছুক্ষণের মধ্যেই শহরের মেঘানিনগর এলাকার একটি আবাসিক ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়, আগুন ধরে যায় এবং ২৪২ জন আরোহীর মধ্যে মাত্র একজন প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পর যুক্তরাজ্যে পাঠানো ১২-১৩টি কফিনের মধ্যে অন্তত দুটি কফিন ভুলভাবে শনাক্ত হয়েছে বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর আইনজীবী জেমস হিলি। তিনি বলেন, ব্রিটেনে পাঠানো মরদেহগুলোর সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ মিলছে না। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, মরদেহ শনাক্তকরণ ও ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে আহমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালে এবং এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে এর কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই। তবে, মরদেহগুলো পাঠানো হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার কার্গো ইউনিটের মাধ্যমে। এখনও পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে এই অদলবদলের বিষয়টি স্বীকার করেনি, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে। নিহতদের পরিবার আরও অভিযোগ করেছে, ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের জটিল ও দুর্বোধ্য আইনি ফর্ম পূরণে বাধ্য করা হচ্ছে এবং তা না করলে টাকা দেওয়া হবে না—এই হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের আইনি প্রতিষ্ঠান স্টুয়ার্টস বলছে, এই ফর্মগুলোতে এমন সব আইনি শব্দ রয়েছে, যেগুলো বুঝে না পূরণ করলে ভবিষ্যতে তা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে। তবে এয়ার ইন্ডিয়া এই অভিযোগগুলিকে ভিত্তিহীন বলেছে এবং দাবি করেছে, তারা দ্রুততম সময়ে অগ্রিম ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করছে। দুর্ঘটনার পর টাটা গ্রুপ নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি রুপি ও জরুরি প্রয়োজনে ২৫ লাখ রুপি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এই অনভিপ্রেত দুঃখজনক ঘটনায় স্বজনহারা পরিবারগুলোর সামনে এখন শুধু শোক নয়, আইনি ও প্রশাসনিক ভোগান্তিও যেন বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Leave a comment