আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ভারত থেকে ১০ হাজার গরু এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অগ্রিম টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একটি প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন নেত্রকোনার আটপাড়ার চরপাড়া গ্রামের মো. মেহেদী হাসান (৫৫) এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের মো. নিজাম উদ্দিন (৭১)। বিজিবির ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল হক রাজশাহীর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আটক দুই ব্যক্তি রাজশাহীর বিভিন্ন গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁরা ভারত থেকে গরু এনে দিতে পারেন। প্রতি জোড়া গরুর জন্য অগ্রিম ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন তাঁরা। চক্রটি রাজশাহী অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং হোটেল ভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচের নামে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বিজিবি তাঁদের আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেন, তাঁরা মূলত গরু চোরাচালানের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেন এবং কমিশনের ভিত্তিতে লেনদেন পরিচালনা করেন। তাঁরা আরও দাবি করেন, তাঁরা উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ এবং সীমান্ত বাণিজ্যে বিশেষ অনুমতি পাওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
নিজাম উদ্দিন নিজেকে সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দেন, অন্যদিকে মেহেদী হাসান নিজেকে মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের ঠিকাদার দাবি করেন। তাঁরা ব্যবসায়ীদের বলেন, বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার নির্ধারিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ ভারত থেকে গরু আনতে পারবেন না এবং সীমান্ত অস্থায়ীভাবে গরু আনার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
বিজিবি জানায়, আটককৃতদের কাছ থেকে তিনটি চেক বই, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি ট্রেড লাইসেন্স এবং ৯ হাজার টাকার মতো নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে সকল ব্যবসায়ীকে এমন প্রতারক চক্রের ফাঁদে না পড়ার বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। ঈদকে ঘিরে গরুর চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারকদের সক্রিয় হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকায় সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
Leave a comment