ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার হাঁসখালি এলাকায় ঘটেছে এক চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা । মুসলিম যুবককে বিয়ে করায় প্রাপ্তবয়স্ক এক কলেজছাত্রীকে জীবিত অবস্থাতেই ‘মৃত’ ঘোষণা করে তার পরিবারের সদস্যরা শ্রাদ্ধ করলেন । মেয়ের এই সিদ্ধান্তে মেনে নিতে না পেরে, সামাজিক প্রথা মেনে শ্রাদ্ধশান্তির আয়োজন করা হয়— পুরোহিত ডাকা হয়, দেওয়া হয় পুজো, এমনকি ছবিতে মালাও দেওয়া হয়।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) গভীর রাতে গাজনা উত্তরপাড়া গ্রামের ওই কলেজছাত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরিবারের দাবি, মুসলিম ধর্মাবলম্বী এক যুবককে বিয়ে করেছেন মেয়েটি, যিনি আবার বিবাহিত। এমন সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি পরিবারের লোকজন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও ওই যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন মেয়েটি, কিন্তু তখন বহু বোঝাবুঝির পরে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। তখনও পরিবার তাকে ক্ষমা করে দেয়। প্রায় তিন মাস বাড়িতেই ছিলেন মেয়েটি। কিন্তু আবার পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে পুরো পরিবার।
তারপরেই সিদ্ধান্ত হয়, আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না মেয়েটির সঙ্গে। নিজের মাথা ন্যাড়া করে পুরোহিত ডেকে শ্রাদ্ধের কাজ সম্পন্ন করেন মেয়েটির কাকা। বাড়ির অন্যান্য সদস্য, কাকি, জেঠু, জেঠিমারাও এই কাজে অংশ নেন।
মেয়েটির কাকা বলেন, “আমার ভাইঝি আমাদের খুবই প্রিয় ছিল। ওকে বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি আমরা । কিন্তু সে বারবার আমাদের বিশ্বাস ভেঙেছে। তাই এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। আজ থেকে তার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই আমাদের।”
মেয়েটির কাকিমা বলেন, “আমরা তাকে খুব ভালোবাসতাম। কিন্তু সে আমাদের বিশ্বাসে আঘাত দিয়েছে। তাই এমনটা করতেই হলো, যাতে আর কোনও দিন এই বাড়িতে সে ফিরতে না পারে।”
মেয়েটির বাবা বর্তমানে ইজরায়েলে কর্মরত এবং সেখানে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। পরিবারের লোকেরা জানান, এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি তাঁকে, কারণ তিনি যুদ্ধের পরিস্থিতিতে রয়েছেন এবং সে শারীরিকভাবে অসুস্থ।
এই ঘটনায় এলাকাতেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ একে পরিবারে কঠোর সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন।
সূত্র: আজতক বাংলা
Leave a comment