দু’দেশের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তানের লাহোর শহরে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আংশিকভাবে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) এক সরকারি বিবৃতিতে ভারত জানিয়েছে, সাম্প্রতিক আক্রমণে তারা পাকিস্তানের একাধিক আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট ও রাডার স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, যার ফলে লাহোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ে।
ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তরের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, লাহোরে একটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এখন অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।’ তবে কী ধরনের অস্ত্র বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়েছে, তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
এর বিপরীতে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে তারা গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ২৫টি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, ড্রোন প্রতিরোধের সময় চার সেনাসদস্য আহত হন এবং ঘটনায় একজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান। ড্রোন ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের চলাচলের ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায়—লাহোরের স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা ছেড়ে দিচ্ছেন বোমা নিষ্ক্রিয়কারী গাড়িকে।
ভারত দাবি করছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে পাকিস্তান বিনা উসকানিতে জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে মর্টার ও কামান ব্যবহার করে গোলাবর্ষণের মাত্রা বাড়িয়েছে। এর জবাবে ভারত ছয়টি পাকিস্তানি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি। এ হামলার ফলে দুই দেশের সীমান্তে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পরদিনও কাশ্মীর সীমান্তে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ ঘটে।
সংঘর্ষে দুই দেশেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তান বলছে, ভারতের হামলায় নারী-শিশুসহ অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৫৭ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে ১৬ জন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়েছেন। ভারতের এক সেনাসদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন।
এই পাল্টাপাল্টি আঘাতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা লক্ষ্য করে হামলা চালানো যুদ্ধপ্রস্তুতির এক নতুন ধাপ, যা এই সংকটকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। এই মুহূর্তে দুই দেশেই সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করা হচ্ছে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি।
Leave a comment