ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ফের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল জম্মু। বৃহস্পতিবার রাতে জম্মুর আখনুর শহর এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতের আকাশে সাইরেন বেজে ওঠে এবং সঙ্গে সঙ্গে চোখে পড়ে লালচে আলোকোজ্জ্বল বস্তু, যেগুলোর পর মুহূর্তেই গর্জে ওঠে বিস্ফোরণ।
ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্র জানিয়েছে, তারা সন্দেহ করছে—পাকিস্তান থেকে চালানো ড্রোন হামলার কারণেই এই বিস্ফোরণগুলো ঘটেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের সেনা স্থাপনাগুলো আক্রমণের মুখে পড়েছে। জম্মুর পাঁচটি জেলায় এ ধরনের হামলা হয়েছে—বিশেষ করে আখনুর, সাম্বা ও কাঠুয়া এলাকায়।”
এখনো পর্যন্ত পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এসব বিস্ফোরণ সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর আগে, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে এক বন্দুক হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ওই ঘটনার জেরে দুই দেশই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারত পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীর অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় বলে পাকিস্তান অভিযোগ করে। এতে তাদের দাবি অনুযায়ী, অন্তত ৩১ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন।
পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে যখন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ ঘোষণা করেন, “প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ক্রমে নিশ্চিত হয়ে উঠছে।” তার এই মন্তব্যের পর থেকেই দুই দেশের সীমান্তে গোলাবর্ষণের ঘটনা বাড়তে থাকে।
বৃহস্পতিবার রাতের বিস্ফোরণের পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশ কয়েকটি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে নিষ্ক্রিয় করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের ছোড়া ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।
কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে এখন আতঙ্ক আর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং সাধারণ নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই ঘটনার ফলে দুই প্রতিবেশী পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে আবারও সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে।
Leave a comment