যুক্তরাজ্য সরকার জাতীয়করণের মাধ্যমে চায়নার মালিকানাধীন ‘ব্রিটিশ স্টিল’ নামক ইস্পাত কারখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে । দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষ বা হাউজ অব লর্ডস এবং রাজা কিং চার্লসের অনুমতিক্রমে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) স্পিকার লিন্ডসে হোয়েল হাউয অব কমন্সের জরুরি সভায় এ ঘোষণা দেন। আইন পাসের পর কারখানাটি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন বলে রাতেই নিশ্চিত করেছে বিবিসি।
একসময় যুক্তরাষ্ট্র ইস্পাত উৎপাদনে বিশ্বের অন্যতম প্রধান দেশ ছিল। উনিশ শতকের শিল্প বিপ্লবের সময় দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ। তবে, গত কয়েক দশক ধরে নানামুখী প্রতিবন্ধকতার সামনে পড়ে এখানকার কারখানাগুলোতে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুতের খরচ, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা,পুরোনো কারখানা ও প্রযুক্তি এবং কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ‘গ্রিন ইস্পাত’ তৈরিতে ব্যর্থতাসহ নানাবিধ চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে হিমশিম খাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান কারখানা ব্রিটিশ স্টিল।
এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক ক্ষতি পোষাতে না পেরে যুক্তরাজ্যের স্ক্যানথর্প স্টিল প্ল্যান্টটির দুটি চুল্লি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চায়নার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জিং ইয়ে। এতে করে চাকরি নিয়ে শঙ্কায় পড়েন সাড়ে তিন হাজার কর্মী।
ইস্পাত শিল্পকে বাঁচাতে ইস্টার সানডের ছুটিতে থাকা আইনপ্রণেতাদের ছুটি বাতিল করে জরুরি সভা ডাকা হয় পার্লামেন্টে। সভায় হাউজ অব লর্ডস এবং কিং চার্লসের সম্মতিতে ব্রিটিশ স্টিলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া ও এর চুল্লি চালু রাখার জন্য সরকারকে আইন প্রণয়নের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পার্লামেন্টে শনিবার আইন পাসের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন হাউজ অব কমন্সের স্পিকার লিন্ডসে হোয়েল। এই দিন আইন প্রণয়নের পর ব্রিটিশ স্টিল কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তিনি বলেন, খুব দ্রুতই কারখানাটির নিয়ন্ত্রণ বুঝে নেবে সরকার।
এ ছাড়া প্রতিদিন ৭০০ হাজার পাউন্ড লোকসানে চলা কারখানাটি পরিচালনার জন্য পুনরায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সরবরাহ চেইন শক্তিশালী করার পরিকল্পনার কথাও জানান স্টার্মার।
Leave a comment