ইয়েমেন , ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড আগামী ১৬ জুলাই কার্যকর করবে। দেশটির সরকার ইতোমধ্যেই তার পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস–এর প্রতিবেদনে বুধবার (৯ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
২০১৭ সালে ইয়েমেন থেকে পালানোর সময় কেরালার বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়া আটক হন। ব্যবসায়িক অংশীদারকে হত্যার অভিযোগে ইয়েমেনের আদালত ২০১৮ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। ছয় মাস আগে সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের সাজা পান।
নিমিশার মা প্রেমা কুমারীর পাওয়ার অফ অ্যাটর্নিপ্রাপ্ত মানবাধিকার কর্মী স্যামুয়েল জেরোম জানান, “ইয়েমেন সরকার আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, ১৬ জুলাই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।” এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিমিশার প্রাণরক্ষার জন্য।
ব্যবসায়িক স্বপ্ন, অতঃপর ভয়ংকর পরিণতি:
নার্স হিসেবে ২০০৮ সালে ইয়েমেনে কাজ করতে যান নিমিশা। সেখানে স্বামী ও কন্যাকে নিয়ে কিছুদিন থাকার পর স্বামী ও মেয়ে ২০১৪ সালে ভারতে ফিরে গেলেও তিনি থেকে যান। উদ্দেশ্য ছিল, ইয়েমেনে নিজস্ব ক্লিনিক চালু করা।
সেই লক্ষ্যেই ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদির সঙ্গে যৌথভাবে ২০১৫ সালে একটি ক্লিনিক খোলেন তিনি। কিন্তু এরপর থেকেই শুরু হয় মতবিরোধ। নিমিশার অভিযোগ, মাহদি তার পাসপোর্ট ও টাকা কেড়ে নেন এবং আইনি নথিতে তাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন, যাতে প্রশাসনিক সহায়তা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
২০১৭ সালের ২৫ জুলাই বিরোধ চরমে পৌঁছায়। ওই দিন মাহদিকে ঘুমের ওষুধ ইনজেকশন দেন নিমিশা, যাতে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন এবং নিজের পাসপোর্ট উদ্ধার করতে পারেন। কিন্তু অতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগে মৃত্যু হয় মাহদির। এরপর সহকর্মী হানানকে নিয়ে মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন নিমিশা। একই মাসে ইয়েমেন ছাড়ার সময় গ্রেফতার করা হয় তাকে।
৩৭ বছর বয়সী নিমিশা সাত বছর ধরে ইয়েমেনের কারাগারে বন্দি আছেন । তার মা একাধিকবার কূটনৈতিক ও মানবিক সহায়তা চেয়েছেন। ‘দিয়া’ বা ক্ষতিপূরণ দিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করে মাহদির পরিবার।
ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্ট গত ডিসেম্বরে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে এবং তার প্রাণভিক্ষার আবেদনও প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি নাকচ করে দেন।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
Leave a comment