বাংলাদেশের যশোর জেলার অভয়নগরের ডহরমশিয়াহাটি গ্রামে মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসছে। শুক্রবার এই সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলের নেতা ও বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সফরের অনুমতি এবং প্রস্তুতি সংক্রান্ত বিষয়েও ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা গেছে। কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন জানিয়েছে, সফরের জন্য বিজেপি নেতাদের ভিসা পেতে কোনো সমস্যা হবে না এবং দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন, দলের পক্ষ থেকে যশোরের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে এই সফরের আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। প্রতিনিধিরা স্থলপথে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করবেন এবং সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন।
এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে ও বাস্তব অবস্থা সরেজমিনে দেখতে এই সফরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে গিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে নগদ ছয় হাজার টাকা, ৩০ কেজি চাল ও ২ বান্ডিল টিন সরবরাহ করেছে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
বিজেপির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, তারা সরাসরি আর্থিক সহায়তা দিতে না পারলেও বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি পেলে মতুয়া সম্প্রদায়, রামকৃষ্ণ মিশন, গৌড়ীয় মঠ ও ভারত সেবাশ্রম সংঘের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে চায়।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে বিএনপির এক স্থানীয় নেতাকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডহরমশিয়াহাটি গ্রামে মতুয়া সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি অনুযায়ী, অন্তত ১৮টি বসতবাড়ি এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই সফরকে ঘিরে সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে এটি একটি সংবেদনশীল সফর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যার প্রভাব ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কেও প্রতিফলিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Leave a comment