
টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ফেনী জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নতুন করে জেলার তিন উপজেলার অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৯টিতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র, খাদ্য, ওষুধ ও জরুরি সেবার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে প্লাবিত হওয়া গ্রামগুলোর মধ্যে ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের দুটি এবং মোটবি ইউনিয়নের দুটি গ্রাম, ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম ও দাগনভূঞা উপজেলার একটি গ্রাম রয়েছে। এসব এলাকায় বাড়িঘর, সড়ক ও কৃষিজমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
বন্যার কারণে জেলার পাঁচটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। ফেনী-ফুলগাজী এবং ফেনী-ছাগলনাইয়া আঞ্চলিক সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার ৮২টি আশ্রয়কেন্দ্রে আজ সকাল পর্যন্ত ৯ হাজার ২০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা গতকাল পর্যন্ত পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশু ও অসুস্থসহ ১৮ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। সীমান্তবর্তী পরশুরাম উপজেলায় পানি কিছুটা কমলেও অন্যত্র তা বাড়ছে।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, “জেলার বিভিন্ন অংশে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। কোথাও সহায়তা পৌঁছাতে দেরি হলে সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জানাতে বলা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত রয়েছে এবং সব অংশীজনকে নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তৎপর রয়েছে প্রশাসন।
ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার বাসিন্দারা জানান, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে পানি হঠাৎ করেই বাড়তে থাকে। এতে বাড়িঘর ডুবে গেছে, পুকুর উপচে মাছ ভেসে গেছে, ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে এবং সড়কে যান চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ।
Leave a comment