ফেনী সদর উপজেলার একটি বাড়িতে গ্যাস লিকেজ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ তিনজন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। দগ্ধ তিনজনকে রাতেই ফেনী থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দগ্ধরা হলেন— মো. রফিকুল ইসলাম (৪০), আবুল কাশেম (৫৫) ও জেসমিন আক্তার (৩০)।
ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র সরকার দগ্ধ তিনজনের অবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান, “তিনজনকেই আমরা ভর্তি করেছি। রফিকুল ইসলামের শরীরের প্রায় ২২ শতাংশ, আবুল কাশেমের ২০ শতাংশ এবং জেসমিন আক্তারের ১৩ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের শ্বাসনালীও পুড়ে গেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।”
তিনি আরও জানান, রোগীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সহায়তার জন্য বিশেষ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৮টার দিকে হঠাৎ করে বিকট শব্দে ওই বাড়ির রান্নাঘরে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের ঘরে। স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে পানি ও বালতি ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন, পরে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফেনী জেলা প্রশাসন ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি দগ্ধদের চিকিৎসার সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফেনীর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আহতদের পরিবারের পাশে আছি। একই সঙ্গে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা হবে।”
ফেনীর এই দুর্ঘটনা আবারও স্মরণ করিয়ে দিল গৃহস্থালি নিরাপত্তার গুরুত্ব। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার বর্তমানে চিকিৎসাধীন, তবে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নাগরিকদেরও সতর্ক হতে হবে— যাতে একটি অসতর্ক মুহূর্ত আরেকটি প্রাণঘাতী ট্র্যাজেডিতে পরিণত না হয়।
Leave a comment