ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে নতুন ও বিতর্কিত তত্ত্ব হাজির করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি দাবি করেছেন, ফিলিস্তিনিদের জন্য সৌদি আরবেই একটি রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব, কারণ দেশটির ভূখণ্ড যথেষ্ট বড়।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ফোরটিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘সৌদি কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের ভূখণ্ডেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে। সেখানে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে।’
নেতানিয়াহুর এ মন্তব্য ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যগত ভূমি গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করার ইঙ্গিত দেয়। সৌদি আরব আগেই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের শর্ত হিসেবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তুলেছিল। এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলবে এমন কোনো চুক্তি আমি করব না। বিশেষ করে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব তো নয়ই।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭ অক্টোবরের পরও? আপনি কি জানেন, সেটার মানে কী? গাজাকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র বলা হতো, যা হামাস পরিচালিত একটি স্বাধীন এলাকা ছিল। আর তার পরিণতি কী হলো, আমরা দেখলাম—হলোকাস্টের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা।’
যুক্তরাষ্ট্র সফরের অংশ হিসেবে নেতানিয়াহু গতকাল (৬ ফেব্রুয়ারি) সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প গাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এছাড়া দুই নেতা সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি মনে করি, ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে শান্তি কেবল সম্ভাবনাই নয়, এটি এখন বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে।’
তবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আলোচনা হবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহুর নতুন এই তত্ত্ব ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট আরও ঘনীভূত করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।
Leave a comment