ফরিদপুর শহরের রথখোলা যৌনপল্লী এলাকা থেকে নাসরিন নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতের দিকে ঘটনাটি ঘটে। পরদিন রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আজমীর হোসেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, অতিরিক্ত ইয়াবা সেবনের ফলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই নারীর মৃত্যু হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃত নাসরিন খুলনা জেলার তেরোখাদা উপজেলার পাচুরিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি মো. মজিদ ফরাজির মেয়ে। জীবিকার তাগিদে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুর শহরের রথখোলা যৌনপল্লীতে বসবাস করছিলেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও যৌনপল্লী সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, শনিবার বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে নাসরিন তার ভাড়া ঘরে বিশ্রাম নিতে যান। এরপর দীর্ঘ সময় পার হলেও তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা ঘরের ভেতরে ঢুকে বিছানার ওপর নাসরিনকে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে পুলিশকে জানানো হয়।
খবর পেয়ে কোতয়ালী থানার একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন বা সহিংসতার আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আজমীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নাসরিন ইয়াবায় আসক্ত ছিলেন। সম্ভবত অতিরিক্ত ইয়াবা গ্রহণের কারণে তিনি হার্ট স্ট্রোকে মারা যেতে পারেন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ বলা যাচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি ঘিরে কোনো ধরনের সন্দেহজনক তথ্য বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, রথখোলা যৌনপল্লী এলাকায় মাদক সেবনের প্রবণতা নতুন নয়। বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করলেও মাদক সমস্যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বিশেষ করে ইয়াবার মতো মাদকের সহজলভ্যতা এই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য একটি বড় সামাজিক ঝুঁকি তৈরি করছে বলে মনে করছেন অনেকে।
Leave a comment