উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রা.) ছিলেন বিখ্যাত সাহাবি আনাস ইবনে মালিকের (রা.) খালা এবং দুধপানের সূত্রে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এরও খালা। তাঁর স্বামী ছিলেন উবাদা ইবনে সামিত (রা.), যিনি একজন বিশিষ্ট সাহাবি এবং ইসলামি সেনাপতি ছিলেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রায়ই মদিনার কুবা এলাকায় গেলে উম্মু হারামের বাড়িতে বিশ্রাম নিতেন। একদিন, বিশ্রামের সময় তিনি হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে উঠে হাসতে থাকেন। উম্মু হারাম (রা.) কারণ জানতে চাইলে রাসুল (সা.) জানান, তিনি স্বপ্ন দেখেছেন যে তাঁর উম্মতের একদল লোক সমুদ্রযুদ্ধে অংশ নিয়েছে এবং তারা বাদশাহদের মতো যুদ্ধজাহাজে আরোহন করেছে।
উম্মু হারাম (রা.) তখন অনুরোধ করেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.), দোয়া করুন, যেন আমিও তাদের মধ্যে থাকি।’ রাসুল (সা.) তাঁর জন্য দোয়া করেন এবং আবার ঘুমিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর পুনরায় ঘুম থেকে উঠে তিনি হাসেন এবং জানান, উম্মু হারাম (রা.) সেই প্রথম দলেই থাকবেন।
এই ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবায়িত হয় বহু বছর পর। উসমান (রা.)-এর খেলাফতকালে, সিরিয়ার শাসক মুআবিয়া (রা.) ইসলামের প্রথম নৌ-অভিযান পরিচালনার অনুমতি পান। মুসলিম বাহিনী ইউরোপের সাইপ্রাসে অভিযান চালায়, যেখানে উম্মু হারাম (রা.) তাঁর স্বামী উবাদা ইবনে সামিত (রা.)-এর সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন।
সাইপ্রাস যুদ্ধ ছাড়াই মুসলমানদের দখলে আসে। কিন্তু বিজয়ের পর ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে উম্মু হারাম (রা.) গুরুতর আহত হন এবং সেখানেই ইন্তেকাল করেন।
উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রা.)-এর কবর আজও সাইপ্রাসে বিদ্যমান। তিনি প্রথম মুসলিম নারী যিনি নৌ-যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ইউরোপের মাটিতে শহিদ হন।
Leave a comment