ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা অনুসারে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ দখলের উদ্দেশ্যে অভিযান শুরু করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সোমবার (১১ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ দাবি করেছে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সংগঠনটির ভাষ্য অনুযায়ী, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার পাঁচ সাংবাদিককে হত্যার মাধ্যমে এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। খবর: আনাদোলু এজেন্সি।
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করা ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর আরেকটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ। এর উদ্দেশ্য হলো গাজায় চলমান গণহত্যার প্রমাণ ও তথ্য বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছানো বন্ধ করা। একইসঙ্গে, গাজা দখলের নেতানিয়াহুর “দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনা” এগিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবেই সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট নেতানিয়াহু ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ায়েল জামিরকে গাজা দখলের পরিকল্পনার কথা বলেন । তিনি জানান, “আমাদের লক্ষ্য হলো পুরো গাজা দখলে আনা। এজন্য হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন সকল এলাকায় অভিযান চালাতে হবে, এমনকি যেখানে ইসরায়েলি জিম্মিদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
প্রথমে সেনাপ্রধান এ নির্দেশে আপত্তি জানালেও পরে তা মেনে নেন। পরিকল্পনা প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ইতোমধ্যে জার্মানি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি এ পরিকল্পনা স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে নেতানিয়াহুর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তার সমর্থনের পর গত শুক্রবার ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা পরিকল্পনাটির অনুমোদন দেয়।
এরপর রবিবার (১০ আগস্ট) গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের কাছে সংবাদ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি হামলায় আলজাজিরার দুই প্রতিবেদক—আনাস আল-শরীফ, মোহাম্মদ কুরাইকে—এবং তিন ক্যামেরা পারসন—ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নুফাল ও মোয়ামেন আলিওয়া—নিহত হন।
Leave a comment