Home আন্তর্জাতিক পুতিন কি ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন?
আন্তর্জাতিক

পুতিন কি ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন?

Share
Share

ইউক্রেন যুদ্ধ তিন বছর পেরিয়ে গেছে, এবং পরিস্থিতি এখন এক নতুন মোড় নিয়েছে। সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে সাময়িক ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠছে—রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কি এই সমঝোতায় রাজি হবেন, নাকি ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পথেই থাকবেন?
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ইউক্রেন ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। রাশিয়াও যদি এতে সম্মতি দেয়, তবে যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। কিন্তু রাশিয়া যদি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, তবে শান্তি আলোচনা আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুতিনের সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে একাধিক কৌশলগত বিষয়গুলোর ওপর। যুদ্ধক্ষেত্রে এখন রাশিয়া সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। অনেক আগেই পুতিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি অস্থায়ী কোনো চুক্তি চান না, বরং স্থায়ী সমাধানেই আগ্রহী।
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর পরিস্থিতির নতুন রূপ পেয়েছে। ট্রাম্প ও পুতিনের একান্ত ফোনালাপ এবং রুশ-মার্কিন প্রতিনিধিদের দফায় দফায় বৈঠক যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন জল্পনা তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুতিন আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা যাচাই করে দেখছেন।
রাশিয়া ইতোমধ্যে ইউক্রেনের কৌশলগত শহর কুরস্কের অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এই অবস্থায় ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন আগেই জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেন যদি শান্তি আলোচনায় না বসে, তাহলে তাদের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সামনে এখন খুব বেশি বিকল্প নেই।
কিন্তু পুতিন কেন আপস করবেন? বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেন প্রশাসনের সময় রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও তাতে পুতিন দমে যাননি। বরং এখন রাশিয়া সামরিকভাবে এগিয়ে আছে। ফলে তিনি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে যেতে কতটা আগ্রহী হবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া আপাতত কৌশলগত অবস্থান পর্যবেক্ষণ করছে। জেদ্দার আলোচনার বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করে কয়েক দিনের মধ্যেই ট্রাম্প-পুতিনের আরেক দফা ফোনালাপ হতে পারে। সেই আলোচনার পরই রাশিয়া তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনকে কিছু ছাড় দিতে হতে পারে। এত দিন ইউক্রেন কোনো ছাড় দিতে রাজি ছিল না, কিন্তু বাস্তবতা এখন তাদের বাধ্য করছে আপসের পথে হাঁটতে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শুরুতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও এটি হয়তো ধাপে ধাপে দীর্ঘমেয়াদি শান্তির পথ তৈরি করতে পারে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাশিয়া ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দর-কষাকষি চালিয়ে যাবে। পুতিন এই সুযোগ নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার ওপর চাপ বাড়াবেন, নাকি চুক্তিতে রাজি হয়ে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির দিকে এগিয়ে যাবেন—সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়ার মৃত্যু: ন্যায়বিচারের দাবি

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার পাঁচ বছরের শিশু আছিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায়...

ধর্ষণ মামলা করায় বাবাকে হত্যা, দুই জেলায় দুই লাশ উদ্ধার

বরগুনায় ধর্ষণ মামলার বাদীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে ঢাকার ধামরাইয়ে এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ এবং নরসিংদীর শিবপুরে নিখোঁজের ছয় দিন পর এক অটোরিকশাচালকের...

Related Articles

দেশে সিগারেট কারখানা স্থাপন করবে সিঙ্গাপুর ও ভারতের কোম্পানি

বাংলাদেশে একটি নতুন সিগারেট উৎপাদন কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর ও ভারতের...

যুদ্ধবিরতির শর্ত: রাশিয়ার দাবির তালিকা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিজেদের দাবির একটি তালিকা...

মাত্র ৫০ দিনে বিশ্ব রাজনীতিতে আলোড়ন তুললেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ৫০ দিনের মধ্যেই এমন সব...

২১ যাত্রীর প্রাণহানির পর পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মিদশার অবসান

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩৩...