পটুয়াখালীতে ধর্ষণ মামলার সাক্ষী হওয়ায় মফিজুল মৃধা (৩৮) নামে স্থানীয় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের ২০ দিন পর তার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত মফিজুল পটুয়াখালী সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং ইউনিয়ন বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে পটুয়াখালী সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের পালপাড়া বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ধর্ষণ মামলার সাক্ষী হওয়ার কারণে স্থানীয় প্রতিপক্ষ সোহাগ মাঝি ও তার সহযোগীরা মফিজুলের ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। হামলার সময় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে গেলে হামলাকারীরা পুলিশের ওপরও আক্রমণ চালায়। এ ঘটনায় এএসআই জহির, এসআই আবদুর রহমান, কনস্টেবল মহিবুল্লাহ, রানা ও সাইফুল ইসলামসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা মফিজুলকে প্রথমে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে টানা ২০ দিন আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শেষে মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন,“ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আলাদা মামলা দায়ের করা হয়েছে। হত্যার আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।”
নিহতের স্ত্রী রাবেয়া বেগম বলেন,“আমার স্বামী শুধু অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল, এজন্যই ওরা তাকে মেরে ফেলেছে। আমার দুটি মেয়ে—এখন ওরা কাকে বাবা বলে ডাকবে?”
পটুয়াখালী সদর থানার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দুটি মামলা হয়েছে—একটি হত্যাকাণ্ডের এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায়। প্রাথমিকভাবে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a comment