এক ভয়াবহ বাস্তবতার নাম হচ্ছে চট্টগ্রামের পটিয়ার পাহাড়ি এলাকা । অপহরণকারীদের নিরাপদ ঘাঁটি হয়ে ওঠা এই পাহাড়ি জনপদে সাধারণ মানুষের জীবন এখন অনিশ্চয়তার মুখে । বাগানে যাওয়া, পাহাড়ে কাজ করা—সবকিছুতেই রয়েছে অপহরণের শঙ্কা।
সর্বশেষ সোমবার অপহরণের শিকার হন হাইদগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু জাফর। নিজের বাগান তদারকি করতে গিয়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হাতে বন্দি হন তিনি। অপহরণকারীরা তার পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে দরকষাকষির মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধে সন্ধ্যায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আবু জাফরের স্ত্রী শিরিন আক্তার বলেন , ‘ওরা সরাসরি টাকা চাইল, না দিলেই মেরে ফেলবে বলল। কান্নাকাটি আর অনুরোধ করে যা পারি দিলাম, তারপরই তাকে ফেরত পাই’।
এটাই প্রথম নয়। গত ৩০ এপ্রিল—একই এলাকায় আরও ভয়াবহ এক ঘটনা ঘটে। সেদিন পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা একসঙ্গে ৭ জনকে অপহরণ করে। মুক্তিপণ হিসেবে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা আদায় করে নেয়।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, একাধিক অপহরণ চক্রের আস্তানা পাহাড়ের গভীরে গড়ে উঠেছে। তারা প্রান্তিক কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ ও পাহাড়ে যাওয়া সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে এ চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জায়েদ নূর বলেন, ‘৫ মে’র ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
স্থানীয়রা বলছেন, ভয়ে অনেকে থানায় অভিযোগ করতে সাহস পান না। কারণ এতে অপহরণকারীদের কাছ থেকে আরও হুমকি ও প্রতিশোধের আশঙ্কা বাড়ে।
তারা বলছেন, প্রশাসনিক উদ্যোগ জরুরি হয়ে উঠেছে পটিয়ার পাহাড়ে সন্ত্রাস ও অপহরণের এ ধারাবাহিকতা থামাতে। তা না হলে এই জনপদে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিটি দিন তৈরি করবে নতুন এক অন্ধকারের গল্প।
Leave a comment