নির্বাচন ও পূর্বসংস্কারের বিষয়ে সরকারের কাছে দুটি স্বচ্ছ রোডম্যাপ চেয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তাঁর ভাষায়, “নির্বাচন হতে হবে জনগণের ভোগান্তি এড়িয়ে একটি স্বস্তিজনক সময়ে, এবং সেটি নির্ধারণে দরকার একটি সুস্পষ্ট পথনকশা।”
শনিবার রাজধানীর বারিধারায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন ‘যমুনা’তে এক বৈঠকে অংশ নিয়ে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। কিন্তু সেটি কোন তারিখে বা কোন পর্যায়ে হবে, সে বিষয়ে জনগণের মধ্যে এখনো অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। তাই একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দরকার, যা জনগণকে আস্থা দেবে।”
শুধু নির্বাচনের নয়, প্রয়োজন সংস্কারের রোডম্যাপও—উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, “সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেটা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে না। একটি অর্থবহ নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “এই সরকার মাত্র পাঁচটি সংস্কারে হাত দিয়েছে। কিন্তু সেগুলোর সন্তোষজনক নিষ্পত্তি ছাড়া আমরা এগোতে পারব না। সব সংস্কার একা অন্তর্বর্তী সরকার করতে পারবে না, এজন্য সব পক্ষের সম্পৃক্ততা দরকার।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সমাজে যে অস্থিরতা বিরাজ করছিল, তা আপাতদৃষ্টিতে কমলেও জামায়াত চায় তার স্থায়ী নিষ্পত্তি। এজন্যই দুটি রোডম্যাপ—সংস্কার ও নির্বাচনের—ঘোষণার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথ তৈরি হবে বলে মনে করেন দলটির শীর্ষ নেতা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা কোনো উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করিনি। আমাদের মূল লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।”
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জামায়াত আমিরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রাজনীতিতে চলমান অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে জামায়াতের এ ধরনের স্পষ্ট অবস্থান রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে নির্বাচন ঘিরে সরকার, বিরোধী দল এবং জনগণের মধ্যে বিশ্বাস তৈরিতে এই ধরনের রোডম্যাপের দাবি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
Leave a comment