ঢাকা: রাজধানীর ব্যস্ত নিউমার্কেট এলাকা থেকে সেনাবাহিনীর অভিযান চালিয়ে এক হাজার একশোাধিক ধারালো অস্ত্র উদ্ধার এবং এ সংক্রান্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার এই তথ্য জানিয়ে সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের ডেয়ারিং টাইগার্সের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম বলেন, অস্ত্রগুলো সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোপনে বিক্রি ও সরবরাহ করা হচ্ছিল। তিনি আরও জানান, ধারালো এসব অস্ত্র বিক্রি এবং ভাড়ার জন্যও ব্যবহার হতো, এমনকি ফ্রি ও হোম ডেলিভারির মাধ্যমেও সরবরাহ চলছিল।
ঘটনাটি তদন্তের শুরু হয়েছিল যখন সেনাবাহিনী বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারে যে রাজধানীর একাধিক স্থানে এই ধরনের ধারালো অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া যায় যে নিউমার্কেট এলাকার কয়েকটি দোকান ও গুদামে এসব অস্ত্র মজুত রয়েছে। এরপরই শনিবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তিন থেকে চারটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ১১০০টিরও বেশি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম বলেন, “আমাদের কাছে গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসীরা স্বীকার করেছে যে তারা একটি কেন্দ্রীয় স্থান থেকে এই সামুরাই ধরনের ধারালো অস্ত্র সরবরাহ পাচ্ছে।” তিনি আরো বলেন, “গত তিন-চার মাস ধরে এই অস্ত্রগুলো ব্যাপকভাবে মজুত ছিল এবং সন্ত্রাসীরা বিশেষ করে দেশি অস্ত্রগুলো বেশি ব্যবহার করে।”
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দোকানদার এবং সরবরাহকারীরা রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে এখনো বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তারা এই অস্ত্রগুলো ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করছিল এবং এতে সামাজিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হচ্ছিল।
নিউমার্কেট এলাকা থেকে উদ্ধারকৃত ধারালো অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ছুরি, তলোয়ার, ছুরিকাঘাতের জন্য ব্যবহৃত অন্যান্য ধারালো বস্তু। এসব অস্ত্র দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহ রয়েছে গ্রেপ্তারকৃতদের।
এ অভিযানকে মূলত সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। তারা জানান, সাম্প্রতিককালে নগরীর বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই অভিযান চালানো হয়েছে।
নিউমার্কেট থেকে অস্ত্র উদ্ধার ও গ্রেপ্তার এই ঘটনা দেশের সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ধারালো অস্ত্রসহ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হলে সামাজিক শান্তি বজায় রাখা সম্ভব হবে।
সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া সাধারণ মানুষের সহায়তাও এই প্রচেষ্টাকে সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই অভিযান ঢাকার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য এলাকায়ও সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার প্রতিফলন। নিরাপত্তা বাহিনীগুলো বলছে, তারা কঠোরভাবে নজর রাখবে যাতে অশান্তির সুযোগ আর না পাওয়া যায়।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা দায়ের করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a comment