Home জাতীয় অপরাধ নারায়ণগঞ্জের সাত খুন: ১১ বছর পরে কনডেমড জীবন
অপরাধজাতীয়

নারায়ণগঞ্জের সাত খুন: ১১ বছর পরে কনডেমড জীবন

Share
Share

আজ নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনার ১১ বছর পূর্ণ হলো। সময়ের আবর্তে দেশের অন্যতম আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান আসামি, র‍্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদের জীবন চিত্র অনেকটাই বদলে গেছে। এক সময়ের প্রভাবশালী কর্মকর্তা আজ কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেমড সেলে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন, যেখানে তার জন্য নেই কোনো বাড়তি সুবিধা বা বাহুল্য।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে তৎকালীন সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। ঘটনাটি দেখে ফেলায় আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিমকেও অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, আরেকটি লাশ পাওয়া যায় পরদিন। নিহতদের মধ্যে নজরুল, চন্দন ও ইব্রাহিম ছাড়াও ছিলেন মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও জাহাঙ্গীর আলম।

এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জের আদালত ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। হাইকোর্টে আপিলে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে, বাকিদের সাজা রূপান্তরিত হয়। তবে এখনো সুপ্রিম কোর্টে আপিলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

গণ–অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের আগস্টে সরকারের পতনের পর কারাগারে তারেক সাঈদের জীবনযাত্রায় বড় পরিবর্তন আসে। আগে বাসা থেকে বিশেষভাবে খাবার সরবরাহের সুযোগ থাকলেও এখন তিনি অন্য সাধারণ বন্দীদের মতো রুটি, ভাজি, ভাত, ডাল, সবজি ও মাছের নির্ধারিত খাবারই খাচ্ছেন।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবদুল্ল্যাহেল আল-আমিন জানান, তারেক সাঈদ কনডেমড সেলে বন্দী জীবন যাপন করছেন। সেখানে মাসে নির্দিষ্ট দিনে পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তবে কোনো বাড়তি খাবার দেওয়া হয় না। মাঝেমধ্যে কারা চিকিৎসকরা এসে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

তারেক সাঈদের মতো অন্য মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও বিভিন্ন কারাগারে কনডেমড সেলে আছেন। মেজর (চাকরিচ্যুত) আরিফ হোসেন আছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম এম রানা আছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২–এ এবং বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন আছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।

নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মতো ভয়াবহ অপরাধ বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এবং রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী আলোড়ন তুলেছিল। এক দশক পার হলেও এখনো এর আইনি প্রক্রিয়া চলমান এবং বিচারের পূর্ণাঙ্গ নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে পুরো দেশ।

 

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

পুরোনো বিমানবন্দরে ‘এয়ার শো’ দেখতে মানুষের ঢল

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে আয়োজিত বিশেষ ‘এয়ার শো’ দেখতে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে। উৎসবমুখর পরিবেশে...

বিজয় দিবসকে ঘিরে দেশজুড়ে র‌্যাবের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রস্তুতি

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, জনসমাগমস্থল এবং বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত...

Related Articles

সিলেটে তরুণদের বিদেশমুখিতা বাড়ছে, কারণ ….

সিলেটকে বলা হয় ‘দ্বিতীয় লন্ডন’। যুক্তরাজ্যে সিলেটি প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির কারণে এই...

ওবায়দুল কাদের ও সাদ্দামসহ ৭ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

জুলাই–আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী...

হাদি হত্যাচেষ্টা মামলায় শুটার ফয়সালের বাবা–মায়ের চাঞ্চল্যকর জবানবন্দি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নতুন...

পরবর্তী টার্গেট হাসনাত আব্দুল্লাহ ? ভারতীয় সাবেক কর্ণেলের পোস্ট ঘিরে উদ্বেগ

হাদির ওপর হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার টার্গেট করা হয়েছে হাসনাত...