নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় নিখোঁজের তিন দিন পর সোহাগ হোসেন (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হাত-পায়ের রগ কাটা এবং মুখমণ্ডল অর্ধগলিত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ, যা হত্যাকাণ্ডের নির্মমতার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে। শনিবার (স্থানীয় সময়) বিকেলে উপজেলার বনপাড়া–হাটিকুমরুল মহাসড়কের পাশে আগ্রান তেল পাম্প সংলগ্ন একটি আমবাগান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সোহাগ হোসেন বড়াইগ্রাম উপজেলার চক বড়াইগ্রাম এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হোসেনের ছেলে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, মরদেহটি এমন অবস্থায় পাওয়া যায় যে, প্রথম দেখাতেই এটি একটি পরিকল্পিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র ও পারিবারিক তথ্য অনুযায়ী, তিন দিন আগে সোহাগ তার বন্ধু আকাশের সঙ্গে কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও কোনো খোঁজ না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং পরে বড়াইগ্রাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
নিখোঁজের পর থেকে সোহাগের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানান । তারা বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়েও কোনো তথ্য পাননি। শেষ পর্যন্ত শনিবার বিকেলে স্থানীয়দের কাছ থেকে আমবাগানে একটি মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশকে জানানো হয়।
নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, সোহাগের বন্ধু আকাশ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। তাদের দাবি, বুধবার রাতে আকাশ বালু আনলোডের কাজের কথা বলে সোহাগকে ডেকে নিয়ে যায়। ওই রাতে আকাশ নিজ বাড়িতে ফিরলেও সোহাগ আর ফিরে আসেননি।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, সোহাগ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই আকাশ পলাতক রয়েছেন। তার হঠাৎ গা-ঢাকা দেওয়া বিষয়টি পরিবারের সন্দেহকে আরও জোরালো করেছে। তারা মনে করছেন, সোহাগকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং এর পেছনে ঘনিষ্ঠ কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে।
খবর পেয়ে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তিনি জানান, সোহাগের পরিবারের করা জিডির সূত্র ধরে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে নিহত সোহাগের পরিবার দ্রুত ন্যায়বিচার এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। তারা আশা প্রকাশ করেছে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে।
Leave a comment