রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে তার বাড়ি লক্ষ্য করে এই হামলার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। টিআইবি মনে করছে, এসব হামলা এবং সহিংসতার ঘটনায় সরকারের প্রতিক্রিয়া যথেষ্ট কার্যকর ছিল না, যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি জানায়, শুধু বিবৃতি দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব নয়; বরং সরকারের উচিত তাৎক্ষণিক এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তাদের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এই সহিংসতার মূল কারণ দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে গঠিত কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা, যা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ক্রমাগত দুর্বল করেছে।” তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতি শুধু দেশে নয়, বিদেশেও বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা পাঠাতে পারে।
শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে, টিআইবি জানায়, সরকারকে শুধু বিবৃতি দিয়েই দায় এড়ানো উচিত নয়। সহিংস কর্মসূচির ঘোষণা আগে থেকেই ছিল, অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সেনাবাহিনী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। পরবর্তীতে সরকার তার দায়িত্ব এড়ানোর জন্য এই ঘটনার কথা “অনাকাঙ্খিত” বলে অভিহিত করেছে, যা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
টিআইবি আরও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছে, বর্তমান পরিস্থিতি এক ধরনের প্রতিশোধের আবহ সৃষ্টি করেছে, যা দেশের রাজনৈতিক সংকটকে আরো তীব্র করতে পারে। এমনকি, এটি নতুন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে বিপদের মুখে ফেলতে পারে। সরকারের উচিত, সহিংসতা প্রতিরোধে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষায় দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া। তারা মনে করে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি রাজনৈতিক সংকীর্ণতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলস্বরূপ গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, যার ফলে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের পরিমাণ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। টিআইবি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, সরকার এবং আইনপ্রণেতাদের উচিত আইনি পথে সমস্যার সমাধান খোঁজা এবং জনগণের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো।
পরিশেষে, টিআইবি সব পক্ষের কাছে আহ্বান জানায়, যেন তারা সহনশীলতার পরিচয় দেয় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
Leave a comment