রাজধানীর খিলক্ষেতে ছয় বছরের এক মেয়েশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনিতে আহত এক কিশোরকে আজ বুধবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে খিলক্ষেত বাজার এলাকায় গণপিটুনির এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিশোরটি ওই শিশুকে ধর্ষণ করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে তাকে ধরে মারধর করে।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করে। প্রথমে গুরুতর আহত কিশোরকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
অন্যদিকে, ছয় বছরের মেয়েশিশুটিকেও ধর্ষণের পর গুরুতর অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থা গুরুতর।
খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন বলেন, “অভিযুক্ত কিশোরের মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। তার বয়স আনুমানিক ১৬ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে পরিবারের দাবি, তার প্রকৃত বয়স ১১ বছর। সে স্থানীয় একটি স্যানিটারি পণ্যের দোকানে কাজ করত।”
পুলিশ আরও জানায়, ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল রাতে কিশোরটিকে আটক করা হয়। তবে থানায় নেওয়ার পথে খিলক্ষেত বাজার এলাকায় পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে ছিনিয়ে নেয় এবং গণপিটুনি দেয়। এই ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আশিকুর রহমানও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি গণপিটুনির ঘটনায় যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করতে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানার ওসি জানান, আমরা তদন্ত করছি। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অপরাধ। যারা গণপিটুনিতে অংশ নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলছে, ধর্ষণের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রয়োজন, তবে গণপিটুনি কোনো সমাধান হতে পারে না। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
Leave a comment