ঢাকার দোহার উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে ভয়াবহ এক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে সংঘটিত এই ঘটনায় ডাকাত দলের ছোঁড়া গুলিতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাত আনুমানিক ২টার দিকে ২০-২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল পদ্মা নদী দিয়ে ট্রলারযোগে এসে কুতুবপুর গ্রামের ব্যবসায়ী নিলুয়ার হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায়। মুখোশ পরা ডাকাতরা বাড়ির প্রধান দরজা ভেঙে প্রবেশ করে এবং প্রথমেই নিলুর বাবা-মায়ের কক্ষ থেকে প্রায় ৭-৮ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়।
শব্দ শুনে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকা নিলু ও তার ছোট ভাই ঘুম থেকে জেগে উঠে ডাকাতদের উপস্থিতি টের পান। তারা চিৎকার শুরু করলে আশপাশের গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা হাতে দৌড়ে আসে এবং ডাকাতদের প্রতিরোধের চেষ্টা করে। কিন্তু ডাকাতরা তখন গ্রামবাসীর ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায় ও ইটপাটকেল ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
ডাকাতদের গুলিতে আহত ১৫ জনের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন- বায়েজিদ হোসেন, সোহেল ভান্ডারী (৪৫), মাসুদ (১৮), এমডি রবিন (৩২), নুর মোহাম্মদ (২০), রিয়াজুল ইসলাম (৩৭) ও সাহেব আলী। গুলিবিদ্ধ বায়েজিদ হোসেন জানান, তার শরীরে প্রায় ১০টি রাবার বুলেট লেগেছে এবং তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বাড়ির মালিক নিলুয়ার হোসেন জানান, ডাকাতরা নদীপথ ব্যবহার করে ট্রলারযোগে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তবে গ্রামবাসীর প্রতিরোধে তারা দ্রুত গুলি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা ডাকাতদের ট্রলারটি আটক করেছে এবং পুলিশকে খবর দেয়।
ঘটনার পরপরই দোহার থানার ওসি রেজাউল করিম নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাত সন্দেহে একজনকে আটক করে। এছাড়া, ডাকাতদের ব্যবহৃত গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, “ডাকাতির ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় এখনো আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী। তারা দ্রুত ডাকাতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
Leave a comment