খুলনার ছোট মির্জাপুর এলাকায় স্থানীয় দৈনিক ‘দেশ সংযোগ’ পত্রিকার কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার রাতে এক নজিরবিহীন হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রাত আনুমানিক আটটার দিকে শতাধিক লোকের একটি দল পত্রিকা কার্যালয়ে হামলা চালায়। তারা ভেতরের মালপত্র টেনে-হিঁচড়ে বাইরে এনে রাস্তায় ফেলে দেয় এবং পরে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে পরবর্তীতে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
হামলার পেছনে প্রেক্ষাপট হিসেবে জানা গেছে, আজ প্রকাশিত পত্রিকার একটি খবরে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ এবং সাবেক আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্যদের ‘সংসদ সদস্য’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়, যা পরবর্তীতে উত্তেজনায় রূপ নেয়।
‘দেশ সংযোগ’ পত্রিকার সম্পাদক মুন্সী মো. মাহবুব আলম (সোহাগ), যিনি একইসাথে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, বলেন, “আওয়ামী লীগ থেকে একটি পুরোনো বিবৃতি আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সেটি অনিচ্ছাকৃতভাবে হুবহু ছাপা হয়। ভুল বুঝতে পেরে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই দুঃখ প্রকাশ করে সংশোধনী বিবৃতি দিয়েছি। তবু হামলা হয়েছে, এমনকি ফোনে হত্যার হুমকিও পাচ্ছি।”
পত্রিকাটির অফিস যেখানে অবস্থিত, সেই ভবনের মালিক মো. জামাল জানান, “সন্ধ্যার পর হঠাৎ করে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ জন লোক এসে অফিসে ঢুকে পড়ে। শুরুতে তারা ভাঙচুর করে, পরে সব মালামাল বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
উল্লেখ্য, এর আগেও ৫ আগস্ট ‘দেশ সংযোগ’ পত্রিকার কার্যালয়ে একবার ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর প্রায় ১৫ দিন পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ ছিল। পরে তারা নতুন ভবনে অফিস স্থানান্তর করে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে।
ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত এবং পেছনে কারা মদদ দিয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
Leave a comment