দিন দিন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে গত বছরের তুলনাই এ বছরের শুরুতে রোগী বেড়েছে ৬২ শতাংশের বেশি। আক্রান্ত রোগীর অর্ধেকের বেশি শনাক্ত হচ্ছে বরিশাল বিভাগে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ জন। যদিও এই সময়ে মৃত্যু হয়নি কারও। এর আগের দিন সোমবার আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৮ জন।
এই নিয়ে চলতি মাসের ১০ দিনে কারও মৃত্যু না হলেও মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫২৩ জন। সব মিলিয়ে এবছরে ডেঙ্গুতে মোট ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং মোট ৫ হাজার ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ গত বছরের এই সময়ে মোট ৩ হাজার ১০৩ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই তুলনায় রোগী বেড়েছে ১ হাজার ৯১২ জন। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার আক্রান্তের হার বেড়েছে ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, দেশে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় ২০২৩ সালে। ওই বছরের ১০ জুন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ৩ হাজার ২১ জন। চলতি বছরের ১০ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫ হাজার ১৫ জন। অর্থাৎ, ২০২৩ সালের তুলনায় এবার রোগী বেড়েছে ৬০ শতাংশ। ২০২৪ সালে একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ৩ হাজার ১০৩ জন, ২০২২ সালে ৫২৭ জন ও ২০২১ সালে ৩৭২ জন।
কীটতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি ঘটে থাকে এবং এটাকেই ডেঙ্গু জ্বরের মৌসুম বলা হয়। প্রাকৃতিকভাবে জুন থেকেই শুরু হয় ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশার প্রজনন ঋতু।
তারা বলছেন, এবার ডেঙ্গু বৃদ্ধির আদর্শ পরিস্থিতি রয়েছে। কারণ হিসেবে আবহাওয়া পরিস্থিতি, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর তৎপরতার অভাব এবং সর্বোপরি সরকারের প্রস্তুতির অভাবে ডেঙ্গুর বড় সংক্রমণের শঙ্কা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি রোগী বরিশাল বিভাগের। যা মোট রোগীর ৪০ শতাংশ। এর ১ হাজার ২৫৯ জন রোগী ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন। এরপর চট্টগ্রামে ৮২৫ জন, ঢাকা বিভাগের (ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাদে) বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ৫৩৪ জন ভর্তি হয়েছেন। ১৬৫ জন খুলনা বিভাগে, ৯৪ জন ময়মনসিংহে, ৮৬ জন রাজশাহীতে, রংপুর ও সিলেট বিভাগে ১৯ জন করে রোগী পাওয়া গেছে।
এ বছর মোট ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকার বাইরের রোগী রয়েছেন ৩ হাজার ৭৩৬ জন। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ১ হাজার ২৭৯ জন ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪২৮ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ১৩৪ জন; আর ২৯৪ জন ভর্তি হয়েছেন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।
Leave a comment