চলতি বছরের প্রথম মৌসুমি ও পঞ্চম পূর্ণাঙ্গ বৃষ্টিবলয় ‘ঝুমুল’ ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের দিকে। আগামী ২৮ মে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল দিয়ে শুরু হয়ে এটি ৫ জুন পর্যন্ত সারা দেশে সক্রিয় থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বেসরকারি আবহাওয়া বিশ্লেষণ সংস্থা ‘বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (BWOT)’। এই বৃষ্টি বলয় দেশের প্রায় ১০০ শতাংশ এলাকাকে আচ্ছাদিত করতে পারে বলে সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
‘ঝুমুল’ নামের এই মৌসুমি বৃষ্টিবলয় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকবে সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে। রাজশাহী বিভাগে এটি অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় হলেও সেখানে একটানা বৃষ্টিপাত হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, এ বৃষ্টিবলয়ের প্রভাবে সারা দেশের আকাশ থাকবে আংশিক থেকে পূর্ণ মেঘাচ্ছন্ন। অধিকাংশ এলাকায় একটানা ও দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে এই বৃষ্টিতে কালবৈশাখী ঝড়ের সম্ভাবনা নেই, বজ্রপাতও থাকবে তুলনামূলকভাবে কম। ঝড় না থাকলেও উপকূলীয় এলাকাগুলোতে দমকা হাওয়া এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে সময়বিশেষে উত্তাল পরিস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের শঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে।
এ বৃষ্টিবলয়ের সময়কালকে কেন্দ্র করে রংপুর ও সিলেট বিভাগের নিচু অঞ্চল, এবং চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা ও হালকা বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ করে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, সুনামগঞ্জ, সিলেট, ফেনী, নোয়াখালী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে ঝুমুলের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।
বৃষ্টির পরিমাণের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে সিলেট, সুনামগঞ্জ, কক্সবাজার, নেত্রকোনা, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীতে। এসব জেলায় গড়ে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানী ঢাকায় এ সময়ে গড়ে ৬ দিন বৃষ্টিপাত হতে পারে, পরিমাণে যা ১৭০ থেকে ২২০ মিলিমিটারের মধ্যে হতে পারে।
BWOT পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঝুমুল চলাকালীন সময়ে দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ এলাকায় সেচের চাহিদা পূরণ হতে পারে। আবহাওয়া থাকবে তুলনামূলকভাবে আরামদায়ক, তবে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু এলাকায় জুনের শুরুর দিকে হালকা তাপপ্রবাহ বা ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে।
এ বৃষ্টিবলয় শুরুতে দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর দিকে অগ্রসর হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেঘের গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে পশ্চিম বা দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে পূর্ব কিংবা উত্তর-পূর্ব দিকে যেতে পারে। যদিও এটি কোনো সরকারি পূর্বাভাস নয়, তবে BWOT এর পূর্বাভাস বিশ্লেষণ সাধারণত জনসাধারণের মাঝে আগাম সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হয়।
সংস্থাটি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, “বৃষ্টিবলয় ঝুমুল” এর তথ্য কেবল তাদের গবেষণার ফল, যা সরকারিভাবে স্বীকৃত কোনো পূর্বাভাস নয়। তাই এই তথ্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিয়ে সরকারি সংস্থা, বিশেষ করে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আনুষ্ঠানিক বার্তা অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
Leave a comment