বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু ও শামসুজ্জামান দুদুকে দলের পক্ষ থেকে সতর্কীকরণ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁদের দেওয়া কিছু বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে এ নোটিশ পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
দলীয় সূত্র জানায়, বরকতউল্লা বুলু ও শামসুজ্জামানের বক্তব্য দলীয় অবস্থান ও শিষ্টাচারের বাইরে গিয়েছে এবং এতে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের পরামর্শে তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
২০ মে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের এক আলোচনা সভায় শামসুজ্জামান দুদু জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “বিএনপি নেতারা যদি একত্রে প্রস্রাব করেন, তাহলে এই প্রস্রাবের তোড়ে ভেসে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বা।” তিনি আরও বলেন, “বিএনপি যদি থুথু ফেলে, সেই থুথুর ভেতরেও তোমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।” তাঁর এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিতর্কের জন্ম দেয়।
অন্যদিকে বরকতউল্লা বুলুর একটি বক্তব্য সম্প্রতি ভাইরাল হয়, যেখানে তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্ভাব্য প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আলোচিত অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শোনা যায়। তাঁর ওই মন্তব্যও রাজনৈতিক ও নাগরিক মহলে সমালোচিত হয়েছে।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি বর্তমানে একটি কঠিন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রয়েছে এবং নেতৃত্ব চাচ্ছে, দলের কোনো নেতা যেন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়ে দলের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত না করেন। এই প্রেক্ষাপটেই উভয় নেতাকে মৌখিকভাবে নয়, বরং লিখিত নোটিশ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
দলের দপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন বক্তব্য থেকে বিরত না থাকলে দলের সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
বিএনপির একাধিক নেতা জানান, দলের হাইকমান্ড এখন নেতৃত্বের শৃঙ্খলা ও বার্তার সামঞ্জস্য রক্ষা করতে চাইছে। কারণ, যেকোনো অসাবধানী বক্তব্য সরকার ও বিরোধীপক্ষের হাতে দলের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে।
দুই নেতা এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে দলের প্রতি আনুগত্যের কথা জানিয়ে আসছেন।
Leave a comment