আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সেবা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানিয়েছে, দক্ষিণ সুদানের উত্তরের শহর ওল্ড ফ্যাঙ্গাকে লক্ষ্য করে চালানো ভয়াবহ এক বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত সাতজন। আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।
আল জাজিরার বরাতে, শনিবার (৩ মে) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এমএসএফ জানায়, এ হামলায় শহরের শেষ সচল হাসপাতাল এবং একটি ফার্মেসি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সংস্থাটি বলছে, এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।
এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে এমএসএফ বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছে, বেসামরিক নাগরিক এবং স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
হামলার পেছনে কে বা কারা রয়েছে এবং কেন একটি হাসপাতালকে টার্গেট করা হলো, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। দেশটির সামরিক বাহিনীও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শহরের বাজার এলাকাতেও কিছুক্ষণ পর বোমা হামলা হয়, এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাশারের অনুসারীদের পুরনো বৈরিতা ফের জোরালো হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নুয়ের জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত ফ্যাঙ্গাক এলাকায়, যা ঐতিহ্যগতভাবে মাশারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা কূটনৈতিকদের আশঙ্কা, দেশটি আবারও পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধের পথে এগোচ্ছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি পশ্চিমা দূতাবাস এক যৌথ বিবৃতিতে দক্ষিণ সুদানের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে গভীর উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে। তারা প্রেসিডেন্ট কিরকে আহ্বান জানিয়েছে, মাশারকে মুক্তি দিয়ে সংলাপ শুরু করতে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর দক্ষিণ সুদান ২০১৩ সালেই ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ৪০ হাজারের বেশি মানুষ ডিনকা ও নুয়ের জাতিগোষ্ঠীর মধ্যকার বিভাজন এবং নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে প্রাণ হারায় । ২০১৮ সালে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর ও জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের মাধ্যমে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সম্প্রতি তা আবারো অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
ইতোমধ্যেই দুই দফা পিছিয়েছে ২০২৩ সালের নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০২৬ সালের আগে ভোটগ্রহণের কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
Leave a comment