পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত জনগণের চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে জেলা প্রশাসন গতকাল রবিবার এই সিদ্ধান্ত নেয়।
সম্প্রতি উত্তর ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কারফিউ জারির মাত্র তিন দিন আগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের একটি তল্লাশিচৌকিতে সশস্ত্র হামলা প্রতিহত করে। এতে ১০ জন হামলাকারী নিহত হয়। এর আগেও জানদোলা এলাকায় একটি আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, জানদোলার আত্মঘাতী হামলার এক দিন পর দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দেশটির রাজনৈতিক দল জামিয়াত উলেমা ইসলাম–ফজল (জেইউআই–এফ) দলের জেলা আমিরসহ অন্তত চারজন আহত হন।
পাকিস্তানে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে সশস্ত্র হামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (পিআইসিএসএস) জানায়, ওই মাসে সশস্ত্র হামলার সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পিআইসিএসএসের পরিসংখ্যান অনুসারে, জানুয়ারিতে পাকিস্তানে অন্তত ৭৪টি সশস্ত্র হামলা হয়, যাতে ৯১ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ২০ জন সাধারণ নাগরিক এবং ৩৬ জন হামলাকারী ছিলেন। এসব ঘটনায় ৫৩ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, ৫৪ জন সাধারণ নাগরিক এবং ১০ জন হামলাকারী আহত হন।
সংঘাতের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ, যেখানে জানুয়ারিতে ৪৬টি হামলায় ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বাধিক হামলা হয়েছে বেলুচিস্তানে, যেখানে ২৪টি হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলার পুনরুত্থান নতুন করে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্ত্রাস দমনে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে অঞ্চলটিতে সহিংসতা আরও বাড়তে পারে।
Leave a comment