নিশ্চয়ই আমাদের প্রত্যেকের ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিটির কথা মনে আছে। সেই ছবিটির কথা মনে পড়লেই চোখের সম্মুখে ভেসে ওঠে তিন বন্ধুর প্রতিচ্ছবি। যাদের মধ্যে একজন ছিলেন ফারহান। ফারহান ফটোগ্রাফি পছন্দ করতেন, কিন্তু সমাজ এবং বাবা-মায়ের প্রত্যাশা তাঁকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে বাধ্য করেছিল। ছবিটি দেখার সময় আমরা সকলেই হয়তো সেই বিষয়টি অনুভব করতে পেরেছি…..
কিন্তু পরবর্তীতে সে তার পছন্দ অর্থাৎ ফটোগ্রাফিকেই বেছে নিয়েছিলো। বাস্তব জীবনে কেউ এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, হয়তো আপনি – আমি কখনো সেটি ভেবে দেখিনি?
সেরকম একজন ব্যক্তি হলেন হায়দ্রাবাদের সাই কিরণ ভাগবতুলা, যিনি ১৩ বছর ধরে আইটি সেক্টরে নিজের জন্য একটি সফল ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছিলেন। যেখানে ছিল দুর্দান্ত চাকরি, নিরাপদ ভবিষ্যৎ সহ সবকিছু । কিন্তু একটি জিনিস তাঁর অন্তরে সুপ্ত অবস্থায় রয়ে গেছিলো – তা হল প্রকৃতির প্রতি তাঁর আবেগ এবং নিজেকে আবিষ্কার করার আকাঙ্ক্ষা।
তিনি ২০২৩ সালে, চাকরি ছেড়ে দেন এবং তাঁর স্বপ্ন ও ইচ্ছা অনুযায়ী – ‘ওয়াইল্ডলাইফ হুইস্পারার্স’ শুরু করেন। এটি কোনও সাধারণ স্টার্টআপ নয়, বরং একটি প্ল্যাটফর্ম যা বন, প্রাণী এবং প্রকৃতি থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে মানুষকে আরও উন্নত করে তোলে।
সাই কিরণ এবং তাঁর দল বিশ্বাস করেন -“প্রকৃতি নিজেই একটি খোলা বই, যা আমাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত উভয় জীবনে কিভাবে বেঁচে থাকতে হয়, সহযোগিতা করতে হয় এবং বেড়ে উঠতে হয় তা শেখায় – ।” তাদের এই চিন্তাভাবনা আজকের চাপপূর্ণ কর্পোরেট জীবনে স্বস্তির দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
মূলত এই ঘটনাটি থেকে এটিই প্রতীয়মান হয় যে, অনেক সময় জীবনের সেরা শিক্ষা বা অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ কেবল ডিগ্রী বা অফিসের চার দেয়াল এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সে সুযোগ প্রকৃতির মধ্যে নিহত থাকে। আবেগকে পেশায় রূপান্তরিত করার ধৃষ্টতার মধ্যেই রয়েছে “চাকরির সাফল্য”।
তাহলে ভাবুন আপনার ভিতরেও কি ‘ফারহানের’ মতো লুকায়িত কোন সত্তা রয়েছে? যে- কিনা সমাজ ও পরিবারের নানা বাধ্য-বাধকতাকে ছিন্ন করে নিজের লুকায়িত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে চায়।
Leave a comment