আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর আলোচিত ঢাকা-১৫ আসনে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছে। এই আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে শফিকুল ইসলাম মিল্টনের নাম ঘোষণা করেন।
একই অনুষ্ঠানে বিএনপি ২৩৭টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করে। দীর্ঘ আলোচনা ও স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন,“আমরা প্রায় ২৩৫ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা দিচ্ছি। যেসব আসনে যুগপৎ আন্দোলনের অংশীদার দলগুলো প্রার্থী ঘোষণা করবে, সেগুলোর বিষয়ে আমরা সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নেব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকা-১৫ আসনটি এবারের নির্বাচনে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনে পরিণত হতে যাচ্ছে। জামায়াতের সর্বোচ্চ নেতা ডা. শফিকুর রহমান এই আসন থেকে নির্বাচনে লড়ছেন, যা দলটির জন্য প্রতীকী গুরুত্ব বহন করছে। অন্যদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে সংগঠন ও জনসংযোগে সক্রিয়, যা তাকে স্থানীয়ভাবে শক্ত অবস্থানে রেখেছে।
মাঠপর্যায়ের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দুই দলের প্রভাব ও ভোটব্যাংক প্রায় সমান। জামায়াতের দীর্ঘ সাংগঠনিক উপস্থিতি এবং বিএনপির ঐতিহ্যবাহী ভোটভিত্তি—এই দুই শক্তি মুখোমুখি হয়ে পড়েছে ঢাকা-১৫-এ। ফলে এখানে একটি ত্রিমুখী নয়, বরং প্রকৃত দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এর আগে গত অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করে। সেই তালিকায় ঢাকা-১৫ আসনে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়।
দলটির কেন্দ্রীয় সূত্র জানায়, ডা. শফিকুর রহমান নির্বাচনী প্রচারণার প্রস্তুতি নিয়ে বিদেশ সফর থেকে ফিরে এসেছেন। তিনি সম্প্রতি সৌদি আরবে ওমরা সম্পন্ন করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রবাসী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দেশে ফিরে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনী প্রস্তুতি জোরদারের নির্দেশ দেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীর মুখোমুখি লড়াই ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সম্পর্ককেও নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে পারে। দীর্ঘদিনের মিত্র এই দুটি দলের প্রার্থী এক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে।
Leave a comment