ঈদের পরদিন আজ রোববার দুপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। সরাইলের বেড়তলা থেকে বিশ্বরোড মোড়, কুট্টাপাড়া মোড় হয়ে বাড়িউরা পর্যন্ত যানবাহন ধীরগতিতে চলছে, কিছু জায়গায় পুরোপুরি বন্ধও হয়ে পড়েছে।
যানজটের কারণে হাজারো যাত্রী ও চালককে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে নারী শ্রমিক ও পরিবারের সদস্যদের দুর্ভোগে পড়তে দেখা গেছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও পুলিশ সূত্র জানায়, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে, যার ব্যয় ৫,৭৯১ কোটি টাকা। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু কাজটি চলছে ধীরগতিতে, ফলে এক পাশ দিয়ে দীর্ঘদিন যান চলাচল করতে হচ্ছে।
বিশ্বরোড মোড়ের অব্যবস্থাপনাও যানজটের বড় কারণ। বাইপাস সড়কটি দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে কয়েকজন প্রভাবশালীর দখলে। তাঁরা সেখানে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া তুলছেন। এ ছাড়া মোড় এলাকায় সিএনজি অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড, ফুটপাতে টং দোকান এবং মহাসড়কের ওপর নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা—সব মিলিয়ে যানজট স্থায়ী রূপ নিচ্ছে।
যানজটের প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক এবং সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কেও। দূরপাল্লার যানসহ স্থানীয় যানবাহনও এতে আটকে পড়ছে।
সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন রহমান বলেন, ‘বিশ্বরোড মোড় থেকে যানজটের সূচনা হয়েছে। বাইপাস সড়কটি যদি অবমুক্ত করা যেত, তাহলে সিএনজি স্ট্যান্ডটি সরে যেত এবং যানজট অনেকটাই কমে আসত।’ তিনি আরও জানান, যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছে, তবে জনবল ও যানবাহনের সংকটের কারণে কার্যকরভাবে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে ধীরগতির সড়ক নির্মাণ, অন্যদিকে প্রশাসনিক অবহেলার কারণে ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়েও সড়ক ব্যবস্থাপনায় অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সামনের দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
Leave a comment