রাজধানীর কমলাপুরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে সুমি রানী রায় (৩৬) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রুবেল (৩১) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বৃহস্পতিবার কুমিল্লার মেঘনা থানার একটি এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল সুমিকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে টিকটকের মাধ্যমে সুমির সঙ্গে রুবেলের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর দ্রুতই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সুমি দুই সন্তানের জননী, এবং এ সম্পর্ক তার পরিবারের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল। এ নিয়ে পারিবারিক বিরোধ তৈরি হলে সুমির বোন রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রুবেল সুমিকে বিয়ে করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
গত ২৫ মে সুমি তার বোনকে ফোন করে জানান, তিনি ও রুবেল ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাঁরা মতিঝিলের কমলাপুর এলাকায় অবস্থিত হোটেল সি ল্যান্ডে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে ওঠেন। মঙ্গলবার রাতে তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন। র্যাব জানায়, ওই রাতে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে সুমিকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর তিনি কৌশলে হোটেল ত্যাগ করেন এবং গা ঢাকা দেন।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে কমলাপুর সি ল্যান্ড হোটেলের ছয়তলার একটি কক্ষ থেকে সুমির নিথর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে মতিঝিল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, হোটেল রেজিস্ট্রার খাতায় রুবেল বারবার সুমিকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং নিজের নাম ‘মানিক চন্দ্র’ হিসেবে উল্লেখ করতেন।
সুমির স্বজনেরা মতিঝিল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর র্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রুবেলের অবস্থান শনাক্ত করে। পরে র্যাব-১১–এর সহযোগিতায় মেঘনা থানার একটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, হত্যার ঘটনা নিছক ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকে ঘটেছে বলে দাবি করেছে রুবেল। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো অনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
Leave a comment