মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান বৈরিতা ভয়াবহ সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। ইরান তার সামরিক বাহিনীকে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এবং ছয়টি প্রতিবেশী দেশকে সরকারিভাবে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে।
ইরানি এক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তুরস্ক, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, বাহরাইন ও কুয়েতকে জানানো হয়েছে—তাঁদের ভূখণ্ড বা আকাশসীমা যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা করে, তবে সেই দেশকেও শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে ইরানের কট্টরপন্থী গণমাধ্যম কেহান ইন্টারন্যাশনাল-এ প্রকাশিত একটি সম্পাদকীয় নিবন্ধ, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কেহানকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ মুখপাত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
নিবন্ধে ট্রাম্পকে “মাথায় একের পর এক গুলি করে হত্যা করা হবে” বলে উল্লেখ করা হয় এবং তাকে আখ্যায়িত করা হয়েছে “অভিশপ্ত মৃত্যুর পাত্র” হিসেবে। এতে বলা হয়, ২০২০ সালে ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ নিতেই এই হুমকি।
মিডল ইস্ট আইসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যদিও কুয়েত জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো সহায়তা করবে না; তুরস্ক বলেছে, তারা ইরান থেকে কোনো সতর্কবার্তা পায়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই উত্তেজনা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না—বরং ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, যেখানে অনেক দেশ জড়িয়ে পড়তে পারে।
বিশ্বের নানা দেশ এবং কূটনৈতিক মহলে এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যেকোনো ভুল পদক্ষেপ বা উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের সূচনা করতে পারে, যার প্রভাব পড়বে বিশ্ব রাজনীতিতে ও অর্থনীতিতে।
Leave a comment