আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ চলছে জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ কার্যক্রম শুরু করে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষ তার জবানবন্দি উপস্থাপন করে। এর আগে, গত ১৭ আগস্ট মামলার চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়া ভুক্তভোগী আব্দুস সামাদ ও মিজান নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্য দেন। একইদিন খুলনার শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার ৮ম সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেন। এছাড়া আন্দোলনের সময় আশুলিয়ায় ছয়টি লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা-ও সাক্ষ্য দেন। তিনি তার জবানবন্দিতে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টদের বিচারের দাবি জানান।
গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে সাক্ষ্য ও প্রমাণাদি উপস্থাপন করছে। অন্যদিকে আসামিপক্ষ সাক্ষীদের জেরা করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে। এই মামলাটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ মনোযোগ কাড়ছে, কারণ আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, মামলার ফলাফল বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও প্রভাব ফেলতে পারে।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, নির্ধারিত তারিখে ধারাবাহিকভাবে সাক্ষ্যগ্রহণ অব্যাহত থাকবে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনা হবে। এরপর ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য তারিখ নির্ধারণ করবে।
Leave a comment