আগামী ১০ই জুন এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হোম ম্যাচ ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজন করতে চায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তবে দীর্ঘদিন ধরে চলা স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ এখনও শেষ হয়নি, যা এই ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছিল।
তবে জাতীয় ক্রীড়া দিবসের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—ম্যাচ আয়োজনে কোনো সমস্যা দেখছেন না তিনি।
তিনি বলেন, “জাতীয় স্টেডিয়ামে জুনে ম্যাচ আয়োজনে আমি কোনো বাধা দেখছি না। কাজ অলমোস্ট শেষ। আমার তাবিথ ভাইয়ের (বাফুফে সভাপতি) সাথে কথা হয়েছে। বাফুফে মাঠের ঘাসের আরো একটু কাজ করবে। আমাদের লাইটিং ও অন্যান্য কাজও শেষের দিকে। আমাকে জানানো হয়েছে এক মাসের মধ্যে মাঠ রেডি হয়ে যাবে।”
২০২১ সালের আগস্টে শুরু হওয়া জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজের সময়সীমা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় সেটি এখন ২০২৫ পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো হয়েছে সিলেট স্টেডিয়াম ও বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায়।
বাফুফে সদস্য ও কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউস বলেন, “আমরা সিঙ্গাপুরের ম্যাচ জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আশা করছি জুনের আগেই আমরা মাঠ বুঝে পাবো। আশা করছি এখানেই হামজার খেলা দেখতে পাবেন ফুটবলপ্রেমীরা।”
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হামজা চৌধুরীর আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে ভারতের শিলংয়ে। কিন্তু দেশের মাটিতে এখনও তার ‘হোম ডেবিউ’ হয়নি। ফলে ১০ই জুনের ম্যাচকে ঘিরে বাড়তি আগ্রহ ফুটবলপ্রেমীদের।
জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে প্রিয় তারকাকে মাঠে দেখতে চায় হাজারো সমর্থক। স্টেডিয়াম প্রস্তুত থাকলে এই ম্যাচ হবে হামজার জন্য দেশের মাঠে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ—একটি স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে সেটি।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় স্টেডিয়ামে গতকাল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে একটি প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদউদ্দিন চৌধুরি হ্যাপি ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার।
তারা মাঠ নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (NSC) ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক জানান,”আমরা আগামীকাল (আজ) থেকে মাঠের কাজ শুরু করতে চাই। আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে এখানে অন্য কাউকে মাঠ বরাদ্দ না দেয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে।”
স্টেডিয়ামের মূল অবকাঠামো প্রস্তুত হলেও এখনও ম্যাচ কমিশনারের জন্য নির্দিষ্ট কক্ষ, ড্রেসিং রুমের আসন ব্যবস্থা ইত্যাদি কিছু বিষয় নিয়ে সংশয় রয়েছে। বাফুফে এসব কাজ নিজেদের উদ্যোগে করার কথা ভাবছে।
জাতীয় স্টেডিয়ামে পুনরায় আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনে ফিরছে আশার আলো। হামজা চৌধুরীর হোম অভিষেককে ঘিরে তৈরি হয়েছে আলাদা উত্তেজনা। সময়মতো সংস্কার শেষ হলে ফুটবলপ্রেমীরা দীর্ঘদিন পর ঢাকার মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচের স্বাদ পাবেন।
Leave a comment