বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্তকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ ও মিছিল করেছে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে জমিয়তের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার কোনো রাজনৈতিক দল বা জনগণের সঙ্গে পরামর্শ না করে জাতিসংঘের মতো বিদেশি সংস্থাকে বাংলাদেশে মানবাধিকার কার্যালয় খোলার অনুমতি দিতে পারে না।’ তিনি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের মুখে পড়তে হবে।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ইতিহাস একপাক্ষিক, পশ্চিমা মূল্যবোধনির্ভর এবং মুসলিম বিশ্বে নিপীড়নের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকার অভাব রয়েছে। ফিলিস্তিন, কলম্বিয়া কিংবা উইঘুর মুসলমানদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে কমিশনের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা তুলে ধরে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, “বাংলাদেশে এত দরদ কেন?” বক্তাদের মতে, এটি আন্তরিকতা নয়, বরং দেশের স্বার্থবিরোধী এক গভীর চক্রান্ত।
জমিয়তের মহাসচিব সরাসরি অভিযোগ করেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলকে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই চুক্তি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘একাত্তরের হাতিয়ার আরেকবার গর্জে উঠবে, যদি এই চুক্তি বাতিল না করা হয়।’
এ সময় জমিয়তের পক্ষ থেকে আগামী ৭ আগস্ট সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচি শেষে একটি মিছিল বের হয়ে পল্টন মোড় ঘুরে বিজয়নগরে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা অংশ নেন। শান্তিপূর্ণ হলেও সমাবেশ ঘিরে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়।
এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে এমন গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি নিয়ে জনমত উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা যৌক্তিক—তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
Leave a comment