জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভার পাঁচশিরা এলাকায় ধান সেদ্ধ করার চাতালের হাউসের পানিতে পড়ে প্রাণ হারিয়েছে আবু বক্কর সিদ্দিক (৪) নামে এক শিশু। রবিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত শিশুটি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের অহিদুল ইসলামের ছেলে। শিশুর বাবা-মা উভয়েই ওই চাতালে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
স্থানীয় সূত্র ও পরিবার জানায়, প্রতিদিনের মতো রবিবার বিকেলে অহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী চাতালে ধান ভেজানো ও সেদ্ধ করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় তাদের একমাত্র সন্তান আবু বক্কর সিদ্দিক খেলতে খেলতে হাউসের পাশে চলে যায়। একপর্যায়ে অসাবধানতাবশত সে গরম পানি ভর্তি ধান সেদ্ধ করার হাউসে পড়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে দেখতে না পেয়ে পরিবার ও সহকর্মী শ্রমিকরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। প্রায় আধাঘণ্টা পর হাউসের পানিতে শিশুটিকে ভাসতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে চিকিৎসক সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকের প্রাথমিক ধারণা, পানিতে পড়ে শ্বাসরোধ হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান,“দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। শিশুটির মৃত্যু একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তবু তদন্তের পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটি সবার অজান্তে খেলতে গিয়ে পড়ে যায়। স্থানীয় সমাজকর্মী মো. আলাউদ্দিন বলেন,“এই চাতালগুলোতে শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। শিশুদের খেলার জায়গা নেই, এমনকি বিপজ্জনক এলাকাগুলো ঘেরাও করাও হয় না। ফলে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।”
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের উচিত এসব শিল্প স্থাপনায় শ্রমিক ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তদারকি বাড়ানো। আবু বক্কর সিদ্দিকের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহকর্মী শ্রমিকরা জানায়, পিয়াসী ও তার স্বামী অহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে চাতালে কাজ করতেন। তাদের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পরিবারটি ভেঙে পড়েছে।
Leave a comment