Home জাতীয় অপরাধ ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে বিসিএস-এ উত্তীর্ণ করতেন না অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম
অপরাধ

ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে বিসিএস-এ উত্তীর্ণ করতেন না অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম

Share
Share


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টার” অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে সূত্রাপুর থানা পুলিশ। বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়। পুলিশের দাবি, তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি হত্যা প্রচেষ্টার মামলার ভিত্তিতেই এ গ্রেপ্তার।
সূত্রাপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, “আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে ছাত্র রাজনীতির সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আজ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান আছে।”
গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা। তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী আমলে এই ধরনের দলান্ধ শিক্ষক সমাজকে কলঙ্কিত করেছে। আনোয়ারা বেগম স্পষ্টভাবে বলতেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা কাজ করে তারা রাজাকার, ছাত্রদল-শিবির তাদের মধ্যে পড়ে এবং এদের গুলি করে মারা উচিত।”
সুজন মোল্লা আরও অভিযোগ করেন, “তিনি যখন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন, তখন ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে বিসিএস উত্তীর্ণ করতেন না। তার মতো দলীয় আনুগত্যশীল ব্যক্তিদের মাধ্যমে ছাত্রলীগের অনুগতদের পুলিশ-প্রশাসনে নিয়োগ দেওয়া হতো। এর মাধ্যমে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের ওপর নির্যাতনের পথ তৈরি হয়েছে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “আজ আনোয়ারা বেগম ক্যাম্পাসে আসবেন, আমরা জানতাম না। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে তাও আমাদের জানা ছিল না। শুনেছি, পুলিশ ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।”
প্রসঙ্গত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রদলের সেই সময়কার সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা। ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের ৯৪ জনসহ মোট ১৯৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার প্রধান আসামি করা হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
ঘটনার সূত্র ধরে শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক প্রভাব, সরকারি নিয়োগে পক্ষপাত এবং মতাদর্শগত বৈষম্যের প্রশ্নে ফের একবার সরব হয়েছে বিভিন্ন পক্ষ। সচেতন মহল বলছে, বিচার ও তদন্তে নিরপেক্ষতা না এলে উচ্চশিক্ষা ও সরকারি নিয়োগ ব্যবস্থার উপর থেকে মানুষের আস্থা উঠে যাবে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

কলম্বিয়ায় স্কুল শিক্ষার্থীদের বাস খাদে পড়ে নিহত ১৭

কলম্বিয়ার উত্তরাঞ্চলের একটি গ্রামীণ এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি বাস পাহাড়ি খাদে পড়ে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায়...

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে সেনা অভিযান: ১৩ সন্ত্রাসী নিহত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার বান্নু ও মোহমান্দ জেলায় পরিচালিত পৃথক দুইটি সেনা অভিযানে মোট ১৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আন্তঃবিভাগীয়...

Related Articles

মোহাম্মদপুরে মা– মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করল গৃহকর্মী আয়েশা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যার আলোচিত মামলায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এসেছে। এ...

ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক: সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক...

অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধের ঘটনায় ১৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত

‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলনের সময় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে টানা ছয় ঘণ্টারও...

হাদির ওপর গুলিবর্ষণ: ম্যানহোল থেকে ভুয়া নম্বর প্লেট উদ্ধার, ৮ দফা হাতবদল হয় হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও...