চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদ হত্যার ২৪ দিন পর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ স্ত্রীসহ গ্রেফতার করেছে পাঁচজনকে।
গ্রেফতারকৃতদের শনিবার (১৯ জুলাই) সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নিহত ফয়েজের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫), ফিরোজা বেগমের বড় বোন শ্যামলা বেগম (৬০), দিনমজুর আকতার (৩২), আকতারের দুই সহযোগী ইয়াছিন রুবেল (২৫) ও শাকিব (২৩)। নিহত ফয়েজ আহমেদ করেরহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বদ্ধ ঘেড়ামারা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুন রাত সাড়ে ১২টার দিকে বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদকে নিজ ঘরে হাত-পা বেঁধে ও মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন গ্রেফতারকৃতরা। ওই দিন সকাল ৯টা নাগাদঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ । এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আলমগীর হোসেন জোরারগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম এবং তার বড় বোন শ্যামলা বেগম স্বামীর ঘরে রাখা টাকা হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে ছক আঁটে এই হত্যাকাণ্ডের। তারা স্থানীয় দিনমজুর আকতারকে ভাড়া করেন। এরপর আকতার তার দুই সহযোগী ইয়াছিন রুবেল ও শাকিবকে সঙ্গে নেন। হত্যাকাণ্ডের রাতে ফিরোজা ধাত্রীর কাজের অজুহাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় দরজা খোলা রেখে যায়। পরে ফিরোজা দরজা খোলা রাখার বিষয়টি আকতারকে ফোন করে জানান । এরপর ঘটনার দিন রাত ১২টার দিকে দিনমজুর আকতার ও তার দুই সহযোগী ইয়াছিন রুবেল ও শাকিব ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় ফয়েজ আহমেদের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। এ সময় চিৎকার করলে তার মুখে কাপড় গুঁজে দেন এবং মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তারা ঘরের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৩০ হাজার টাকা লুট করে পালিয়ে যান। লুট হওয়া টাকার মধ্যে আকতার নেন ১৪ হাজার, বাকি ১৬ হাজার টাকা রুবেল ও শাকিব ভাগ করে নেন।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি এম আব্দুল হালিম বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত পারিবারিক হত্যাকাণ্ড। ঘটনাটি উদঘাটনে প্রযুক্তির সহায়তা, গোপন তথ্য এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করেছি আমরা । খুব অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে চিহ্নিত আসামিদের। হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তারা।
মীরসরাই সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নোমান আহমেদ বলেন, ফয়েজ আহমেদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দিনমজুর আকতারকে সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে শনিবার ভোরে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয় রুবেল ও শাকিবকেও। পরবর্তীতে গ্রেফতার করা হয় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ফিরোজা বেগম ও শ্যামলা বেগমকেও। জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচ আসামিই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে তিনি জানান।
Leave a comment