ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে চকলেট খেতে বাধা দেওয়ায় পুলিশ সদস্যদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলাম। বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানার আদালতে শাহবাগ থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আইনজীবী ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় কামরুল ইসলামের আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন তার ক্লায়েন্টকে একটি চকলেট দেন। চকলেটটি হাতে নিয়ে মুখে দেন কামরুল ইসলাম। এসময় আদালতে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা আইনজীবীকে বাধা দেন এবং বিষয়টি নিয়ে তাকে সতর্ক করেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কামরুল ইসলাম উচ্চস্বরে বলেন,“আমি ডায়াবেটিসের রোগী, এজন্য আমাকে চকলেট দেওয়া হয়েছে। এতে বাধা দেওয়ার কী আছে? বেয়াদব কোথাকার!” চিৎকার শুনে আদালতে থাকা অনেকে হতবাক হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনজীবীকে কাঠগড়ার সামনে থেকে সরিয়ে নেন।
ঘটনার সময় হাকিম জুয়েল রানা এজলাসে উপস্থিত ছিলেন না। কিছুক্ষণ পর আদালতে প্রবেশ করে তিনি কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে আসামির অপর আইনজীবী আফতাব মাহমুদ চৌধুরী আদালতের অনুমতি চেয়ে বলেন,“কামরুল ইসলাম ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন অসুস্থ মানুষ। সকালে কারাগার থেকে এনে দীর্ঘ সময় হাজতখানায় রাখা হয়েছে। মানবিক কারণে অন্তত পানি ও চকলেট খাওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত।” তবে আদালত সেই অনুমতি দেননি। সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেন কামরুল ইসলামের পক্ষের আইনজীবীরা।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট “জুলাই আন্দোলন”-এর সময় রাজধানীর বাংলা মোটর ফুটওভার ব্রিজের মোড়ে আন্দোলনকারীদের ওপর ইটপাটকেল ও গুলি চালানোর অভিযোগে কামরুল ইসলামসহ মোট ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদী ছিলেন গুলিবিদ্ধ আল আমিন ইসলাম ওরফে সোয়েব। এরপর ২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর ঢাকার উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাকে একাধিক মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।
ঘটনাটি আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত আইনজীবী ও রাজনৈতিক মহলে দ্রুত আলোচনার জন্ম দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে ঘটনাটিকে “চকলেট বিতর্ক” বলে অভিহিত করছেন ।
Leave a comment