গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রামে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভা চলাকালে এক ব্যক্তিকে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার কার্যালয়ে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তি শ্যামল মণ্ডল, যিনি সংস্থাটির কোষাধ্যক্ষ ও ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শলোমন অপূর্ব বাড়ৈ জানান, বর্তমান কমিটির সহসভাপতি এন্ড্রু বিশ্বাস সংস্থার জায়গা দখলের চেষ্টা করছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। শনিবারের সভা চলাকালে তিনি ৪০-৫০ জন লোক নিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন এবং সভা বানচালের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সদস্যদের মারধর করা হয়। আতঙ্কে অনেকেই দৌড়ে পালিয়ে গেলেও শ্যামল মণ্ডলকে আটকানো হয় এবং তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, ফলে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন।
সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্য অভিযোগ করেন, এন্ড্রু বিশ্বাস ইতিপূর্বে তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, এন্ড্রু বিশ্বাসের নেতৃত্বে প্রভাস বাড়ৈ, দিলীপ বাড়ৈ, আইজ্যাক বাড়ৈ, জুয়েল বাড়ৈসহ প্রায় ৪০-৫০ জনের একটি দল পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালায়। অন্যদিকে, অভিযুক্ত এন্ড্রু বিশ্বাস এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জায়গা দখলের অভিযোগ মিথ্যা। তিনি স্বীকার করেন যে সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্যকে থাপ্পড় মেরেছিলেন, তবে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে তাঁর বা তাঁর অনুসারীদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেন।
গুরুতর দগ্ধ শ্যামল মণ্ডলকে প্রথমে গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর বুক, পেট ও হাত মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে। গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির সাজেদুর রহমান জানান, এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনা গোপালগঞ্জের স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং দ্রুত বিচার ও তদন্তের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
Leave a comment