গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে গৃহবধূ রহিমা বেগম (৩৮) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মেয়ের দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গলা কেটে নির্মম হত্যার এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। র্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতার দুই যুবক হত্যাকাণ্ডে তাদের সংশ্লিষ্টতার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে র্যাব-১, র্যাব-৬ এবং র্যাব-১১-এর একটি যৌথ দল নরসিংদীর মাধবদী থানার আলগী এলাকা এবং বাগেরহাটের কচুয়া থানার দেপাড়া বাজার থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করে। আটক ব্যক্তিরা হলেন—কুড়িগ্রামের উলিপুর থানার নন্দু নেপড়া গ্রামের আইনুল ইসলাম ওরফে বুলেট এবং বাগেরহাটের গজারিয়া গ্রামের রাজীব।
গ্রেফতারের বিষয়ে র্যাব-১ গাজীপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মো. নাফিজ বিন জামাল জানান, শনিবার সকালে কোনাবাড়ীর বাইমাইল এলাকার নওয়াব আলী মার্কেটে অবস্থিত একতা ভিলার পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে গৃহবধূ রহিমা বেগমের গলা কাটা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। একই কক্ষে তার স্বামী ইমরান হোসেনকে গুরুতর জখম অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় ইমরানকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঘটনার পর নিহতের ভাই আ. রহিম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর র্যাব প্রযুক্তিগত সহায়তায় তদন্তে নামে এবং বিভিন্ন সূত্র বিশ্লেষণ করে সন্দেহভাজন দুই যুবককে শনাক্ত করে। পরে পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেফতার দুই যুবক ওই ফ্ল্যাটেরই সাবলেট ভাড়াটিয়া ছিলেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে থাকতেন এবং নিহতের মেয়ের কাছের বন্ধু ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে, শনিবার ভোরে রহিমা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। এছাড়া তার স্বামী ইমরান হোসেনকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গলায় আঘাত করা হয়। তবে ঘটনাস্থল থেকে ইমরানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।
রবিবার দুপুরে গ্রেফতার দুই যুবককে কোনাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গ্রেফতার আইনুল ইসলাম ও রাজীব নিহত রহিমা বেগমের মেয়ের বন্ধু। হত্যাকাণ্ডের কারণ ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে তাদের রিমান্ডে এনে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
এদিকে, আহত ইমরান হোসেন বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত হলেও তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল, যার কারণে তদন্তকারীরা এখনো তার আনুষ্ঠানিক জবানবন্দি নিতে পারেননি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার সুস্থ হতে আরও কয়েক দিন লাগবে।
Leave a comment