ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার ও নির্বিচার হামলায় মানবিক বিপর্যয় দিন দিন চরমে পৌঁছেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় শুধু আবাসিক এলাকা, বিদ্যালয় কিংবা উপাসনালয়ই নয়—নিরাপদ আশ্রয় বলেও বিবেচিত হাসপাতালগুলোও রেহাই পাচ্ছে না।
গাজার হামাসনিয়ন্ত্রিত সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫টি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে বা অগ্নিসংযোগ করেছে। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন গাজার আল-আহলি আরব ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতাল, যেখানে আজ দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইসরায়েল।
আজকের হামলায় হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ, অভ্যর্থনা কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসাকর্মীরা। তবে হামলার আগেই রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে তাৎক্ষণিক হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে হামলার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
এর আগেও, ২০২৩ সালের অক্টোবরে আল-আহলি হাসপাতালে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান শতাধিক মানুষ। সেই ঘটনা বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল।
এদিকে গাজার বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন, হাসপাতাল লক্ষ্য করে এমন হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইনের চরম লঙ্ঘন। তারা বলছেন, “আশ্রয়ের স্থানে হামলা মানে পুরো এক জাতিকে নিঃশেষ করার পাঁয়তারা।”
গাজার বেসামরিক জরুরি পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে, পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। চিকিৎসা সেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলো ও জাতিসংঘ এ বিষয়ে বারবার উদ্বেগ জানালেও ইসরায়েলের হামলা থেমে নেই। মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়া গাজায় এখন একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন সবচেয়ে জরুরি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হাসপাতালগুলোতে এমন হামলা কেবল অবরুদ্ধ গাজাবাসীর চিকিৎসা-ব্যবস্থা নয়, আন্তর্জাতিক মানবতার ওপর সরাসরি আঘাত।
Leave a comment