গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, সব ইসরায়েলি সেনার প্রত্যাহার এবং মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে সংগঠনটি।
হামাস জানিয়েছে, তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের উদ্যোগে দেওয়া প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। সংগঠনটি জানায়, তারা জাতীয় পর্যায়ের আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। তাদের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, হামাস গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কাজ করতে চায়। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সংগঠনটি ইসরায়েলের কাছে ১০ জন জীবিত জিম্মি ও ১৮ জনের মরদেহ হস্তান্তরের প্রস্তাব দিয়েছে। এর বিনিময়ে তারা চায়, ইসরায়েল যেন ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেয়। হামাসের দেওয়া শর্তগুলো স্টিভ উইটকফের মূল প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে দাবি করা হয়।
হামাসের বিবৃতিতে প্রস্তাবের কোনো নির্দিষ্ট সংশোধনী না থাকলেও ফিলিস্তিনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কিছু সংশোধনের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। তবে সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া ছিল ইতিবাচক।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানায়, গাজায় জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে এক বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। যদিও সরকারিভাবে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা এখনো আসেনি।
গত মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হলেও কোনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধ থামাতে হলে হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে এবং তাদের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো বিলুপ্ত করতে হবে। একইসঙ্গে গাজায় অবস্থানরত সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। হামাস এসব শর্ত প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা অস্ত্র ত্যাগ করবে না এবং ইসরায়েলের সেনা গাজা ত্যাগ না করা পর্যন্ত স্থায়ী শান্তির কোনো ভিত্তি তৈরি হবে না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলমান ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে উপত্যকার অধিকাংশ এলাকা। পরিস্থিতির অবনতি রোধে আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যে নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হলেও বাস্তবিক অগ্রগতি এখনো অনিশ্চিত।
Leave a comment