অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় শেষ ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনি । এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৩৮৮ জন বেসামরিক মানুষ।
সোমবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতির বরাতে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে , সোমবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার পৃথক স্থানে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছে ইসরায়েলি বিমান হামলায়। ইসরায়েলের বিমান বাহিনী বিমান অভিযানের আগে কোনো সতর্ক সংকেত বা সাইরেন দেয়নি। সোমবারের হামলায় ধ্বংস্তূপের তলায় আটকা পড়েছেন অন্তত শতাধিক মানুষ। তাদের উদ্ধার করা এখনও সম্ভব হয়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টার হতাহতসহ ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ হাজার ৯২৭ জনে দাঁড়িয়েছে এবং এ সময় আহত হয়েছেন এক লাখ ২৬ হাজার ২২৭ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি। যদিও বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকে আছেন। উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না সেখানে। হতাহতদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) জানিয়েছে, নিরাপত্তার কারণে তাদের সব খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। ফাউন্ডেশনটির এক ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিতরণকেন্দ্রগুলোতে যাওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে অনেক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় এসব কেন্দ্র।
ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ গাজায় কঠোর অবরোধ আরোপ করার পর থেকে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানি প্রবেশ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত মাসে কিছু ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হলেও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
অন্যদিকে, গাজার মিডিয়া অফিস আগেই জানিয়েছে, উত্তর গাজা অঞ্চলের এক হাজারেরও বেশি বাড়িঘর পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি সেনারা। পাশাপাশি, ওই এলাকার ৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে গাজা সিটির দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যেখানে তাদের আশ্রয় দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামোই নেই।
জাতিসংঘের মতে, গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচার আক্রমণের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।এছাড়াও অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
Leave a comment