গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে গত ছয় সপ্তাহে অন্তত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)। নিহতদের মধ্যে ৬১৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে এবং ১৮৩ জন নিহত হয়েছেন ত্রাণ নিতে যাওয়ার পথে।
শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, নিহতদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে গাজার হাসপাতাল, কবরস্থান, এনজিও ও স্বজনদের কাছ থেকে। অধিকাংশ নিহতের শরীরে গুলির চিহ্ন ছিল।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) গত ২৬ মে গাজায় বিতর্কিত ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করে। ত্রাণ বিতরণের স্থানগুলো এমন এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে ইসরায়েলি সেনারা মোতায়েন রয়েছে। শুরু থেকেই এই কার্যক্রমের মান ও উদ্দেশ্য নিয়ে জাতিসংঘ উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
জিএইচএফ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, প্রাণঘাতী হামলা মূলত জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলোতে হয়েছে। আর ইসরায়েল বলেছে, ত্রাণ যেন হামাসের হাতে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ। নিহতদের বড় অংশ নারী ও শিশু।
এমন প্রেক্ষাপটে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে দোহায় আলোচনা চলছে। ইসরায়েল আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা প্রকাশ করেছে। সম্ভাব্য একটি চুক্তিতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা রয়েছে।
তবে বাস্তবতা এখনও নির্মম। বৃহস্পতিবার দেইর আল-বালাহ এলাকায় একটি চিকিৎসাকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি হামলায় ১৬ জন নিহত হন, যাঁদের মধ্যে ১০ জনই শিশু। নিহত এক শিশুর মা সামাহ আল-নোউরি বলেন, “কসম, আমার মেয়ে কিছু করেনি। ও স্বপ্ন দেখত যুদ্ধ শেষ হলে আবার স্কুলে যাবে। কিন্তু ও তো শুধু চিকিৎসা নিচ্ছিল। কেন ওকে মেরে ফেলা হলো?”
তথ্যসূত্র: রয়টার্স
Leave a comment