গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় সাপের কামড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাতে উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত যুবকের নাম এনামুল মিয়া (২৮), তিনি ওই গ্রামের হাবিজার রহমানের ছেলে।
স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এনামুল মিয়া মাছ ধরার ঠুসি (ফাঁদ) বসাতে পাশের কৃষি মাঠে যান। এ সময় মাঠে থাকা একটি বিষধর সাপ তাকে দংশন করে। কামড়ের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু রংপুরে নেয়ার পথেই এনামুলের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।এনামুল মিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য, ফলে তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারটি বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে।
ইদিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বলেন, “কোনাপাড়া এলাকায় সাপের কামড়ে এক যুবকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এমন দুর্ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।” এলাকাবাসী জানায়, এ মৌসুমে কৃষিজমিতে কাজের সময় প্রায়ই সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়। বিশেষ করে রাতে মাঠে বা খালে মাছ ধরতে যাওয়া কৃষক ও তরুণদের এ ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়তে হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাপের কামড়ের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানো এবং ভুল প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে বিরত থাকা। অনেক সময় ভেষজ চিকিৎসা বা টোটকা প্রয়োগের ফলে রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটে।
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ মারা যান চিকিৎসা বিলম্ব বা সচেতনতার অভাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম সরবরাহ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি এই মৃত্যুহার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
Leave a comment